আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ চলার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছিল সিক্রেট সার্ভিস। হোয়াইট হাউসের একটি গোপন বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। হোয়াইট হাউস ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।
সম্প্রতি পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ন্যায়বিচারের দাবিতে ক্রমাগত জোরালো হচ্ছে বিক্ষোভ। এর আঁচ লেগেছে হোয়াইট হাউসেও। শুক্রবার হোয়াইট হাউস এলাকায় একত্রিত হয় বিক্ষোভকারীরা। এদিন পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষও হয়।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিস্থিতি ক্রমাগত উত্তপ্ত হতে থাকায় ট্রাম্পকে বাঙ্কারে লুকিয়ে রাখেন সিক্রেট সার্ভিসের কর্মকর্তারা। মূলত সন্ত্রাসী হামলাজনিত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য হোয়াইট হাউসে গোপন ওই বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছিল। শুক্রবার প্রায় ১ ঘণ্টা মাটির তলার বাঙ্কারে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও পুত্র ব্যারন ট্রাম্পকেও বাঙ্কারে রাখা হয়েছিল। হোয়াইট হাউসের সামনে যথারীতি শনিবার ও রবিবারও বিক্ষোভ হয়েছে। তবে এ দুই দিন ট্রাম্প কী করেছেন তা জানা যায়নি।
রবিবার(৩১মে)) রাতে হোয়াইট হাউসের সামনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও দেখা গেছে। এদিন হোয়াইট হাউসের কাছেই একাধির উৎস থেকে আগুন চোখে পড়ে। দেখা যায় একটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্টে দেখা গিয়েছে, সাধারণ মানুষ জড়ো হয়ে কোথাও গ্রাফিতি আঁকছেন, কোথাও জ্বলছে আতশবাজি।
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রবিবার একের পর এক টুইট করেছেন ট্রাম্প। তার দাবি,, যারা কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু নিয়ে প্রতিবাদ করছেন, তারা নৈরাজ্যবাদী। ট্রাম্পের দাবি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গিয়ে দেশের প্রগতিশীল বামপন্থী শক্তিগুলি দেশের মধ্যে নৈরাজ্য চালাচ্ছে।
২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপলিসে পুলিশ জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করে। ফ্লয়েডের গাড়িতে জাল নোট থাকার খবর পেয়ে তাকে আটক করতে গিয়েছিল পুলিশ। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ১০ মিনিটের ভিডিওতে দেখা গেছে, হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য। নিহত ফ্লয়েড নিরস্ত্র ছিলেন। নিঃশ্বাস নিতে না পেরে তাকে কাতরাতে দেখা যায়। কৃষ্ণাঙ্গদের দাবি, বর্ণবিদ্বেষের বলি হয়েছেন ফ্লয়েড। হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় ১৩টি অঙ্গরাজ্যের ২৫ শহরে জারি করা হয়েছে কারফিউ।
Discussion about this post