আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৮৮৭ জন। এতে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আক্রান্তের বিচারে ইউরোপের দেশ ইতালিকে ছাড়িয়ে ৬ নম্বরে পৌঁছে গেল ভারত। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত আরও ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৬ হাজার ৬৪২ জন।
দেশটির সরকারি তথ্য অনুসারে, শুক্রবারের (৫জুন) তুলনায় করোনা থেকে পুনরুদ্ধারের হারের সামান্য অবনতি হয়েছে। শুক্রবার যেখানে দেশে ৪৮ দশমিক ২৭ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েও পরে সুস্থ হয়েছেন দেখা যাচ্ছিল সেখানে শনিবার সেই পুনরুদ্ধারের হার কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশে।
গত ১ মে থেকেই ভারতে দ্রুতহারে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ওই দিন থেকেই অভিবাসী শ্রমিকদের ভিন রাজ্য থেকে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে চালু হয়েছে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। মনে করা হচ্ছে, অভিবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমেই লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে কপালে ভাঁজ পড়ছে সবার। ইতোমধ্যেই দিল্লি এবং গুজরাটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ অঙ্কের ঘর ছুঁয়ে ফেলেছে। ওদিকে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশেও মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার পেরিয়ে গেছে।
ভারতে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মহারাষ্ট্রের মানুষ। ওদিকে সক্রিয় করোনা রোগীর হিসাবে এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজধানী দিল্লি। যদিও মোট করোনা আক্রান্তের বিচারে দিল্লির আগে রয়েছে দেশের দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ু। আর মৃত্যুর পরিসংখ্য়ানের হিসেবে গুজরাট রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি। তবে মোট করোনা আক্রান্ত, সক্রিয় করোনা রোগী এবং করোনায় ভুগে মৃত্যু, সবদিক থেকে বিচার করেই সব রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্রই।
এদিকে করোনাকে রুখতে ভারতে ২৫ মার্চ থেকে টানা লকডাউন জারি করায় মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। তাই এবার ধীরে ধীরে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করে করোনাকে সঙ্গে নিয়েই জীবন শুরু করার ভাবনা ভেবেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সেই লক্ষ্যেই গত বৃহস্পতিবার(৪জুন) করোনা সতর্কতায় এক নয়া নির্দেশিকা জারি করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী ৮ জুন থেকে দেশের প্রায় সমস্ত শপিংমল, রেস্তোরাঁ, হোটেল এবং ধর্মীয় স্থানগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে সরকার, তবে সব জায়গায় মেনে চলতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা ওই কড়া নির্দেশাবলী। সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া ওই নির্দেশিকাতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে ধর্মীয় স্থান ও মলগুলোতে সীমিত সংখ্যক মানুষকে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হবে। পাশাপাশি ধর্মীয় স্থানগুলিতে কোনোভাবেই প্রতিমা বা দেবালয়কে স্পর্শ করা যাবে না। অফিসগুলোও খুলে যাচ্ছে ৮ জুন থেকে। সেখানেও করোনা সতর্কতায় মেনে চলতে হবে ওই কেন্দ্রীয় নির্দেশাবলী। তবে আপাতত কনটেইনমেন্ট জোনের কোনও বাসিন্দা কাজে যোগ দিতে পারবেন না।
কেন্দ্রের জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে, শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করার জন্য প্রত্যেক অফিসেই থার্মাল স্ক্যানিং যন্ত্র রাখতে হবে। প্রতিটি কর্মীরই মাস্ক ব্যবহার আবশ্যিক। তবে শপিং মল খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও সিনেমা হল, শিশুদের খেলাধুলোর জায়গা সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রগুলোকে এখনও বন্ধ রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
Discussion about this post