আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হচ্ছেন জো বাইডেনই। আগস্টে উইসকনসিনে ডেমোক্র্যাটদের জাতীয় কনভেনশনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বাইডেনের নাম ঘোষিত হবে। প্রার্থিতা অর্জনের জন্য শনিবার প্রয়োজনীয় ১ হাজার ৯৯১ জনের সমর্থন নিশ্চিত করেন তিনি। ফলে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি হচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এই ভাইস প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক বাইডেন জনপ্রিয়তার নিরিখে বর্তমান প্রেসিডেন্টের থেকেও অনেকটাই এগিয়ে। তবে নভেম্বরের আসল লড়াইয়ে তিনিই জিতবেন বলে আশাবাদী ট্রাম্প। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হতে দলের ৩ হাজার ৯৭৯ জন ডেলিগেটের মধ্যে দরকার ছিল এক হাজার ৯৯১ ডেলিগেট বা প্রতিনিধির সমর্থন। গত সপ্তাহে ডিসট্রিক্ট অব কলম্বিয়া এবং ৭টি অঙ্গরাজ্যের প্রাইমারি শেষ হয়। শুক্রবার প্রাইমারিগুলোর ফল প্রকাশ হয়েছে। এতে দেখা যায়, এক হাজার ৯৯৫ ডেলিগেটের সমর্থন নিশ্চিত করেছেন বাইডেন।
এর আগে গত এপ্রিলে দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান ডেমোক্র্যাট দলের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সমাজতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণার ব্যক্তি সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তখনই বাইডেনের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মনোনয়ন লড়াইয়ে ওয়ারেন থাকায় ডেমোক্র্যাট প্রগতিশীল অংশের ভোট ভাগাভাগি হওয়ায় স্যান্ডার্স কুপোকাত হয়ে পড়েন।
তবে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডেলিগেট নিশ্চিতের দিনে বাইডেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের স্মরণ করেছেন। শুক্রবার তিনি বলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির একদল মেধাবী প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করেছি বলে সম্মানিত বোধ করছি। গর্বের সঙ্গে বলছি, সাধারণ নির্বাচনে আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ পার্টি হিসেবে অংশ নেব।
স্যান্ডার্সও আগেই জানিয়েছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার সমর্তকরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাইডেনের প্রচারদলের সঙ্গে লড়াই চালাবে।
পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রতিনিধির সমর্থন জেতা বাইডেনকে এখন দলীয় কনভেনশনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আগস্টে ডেমোক্র্যাটদের কনভেনশনেই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। এরপরই নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে নামতে হবে প্রচারণায়।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় ব্যর্থতা ও মিনিয়াপোলিসে পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ও এর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তুমুল বিক্ষোভে বেশ চাপের মধ্যে আছেন ট্রাম্প। এ পরিস্থিতিতে বাইডেনের জনসমর্থন ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য বেশি বলে সাম্প্রতিক জনমত জরিপে ইঙ্গিতও মিলেছে।
ট্রাম্পের অবশ্য দাবি, এই সব সমীক্ষায় তিনি বিশ্বাসী নন। নভেম্বরে আসল লড়াইয়ে তিনিই জিতবেন। বাইডেনকে ‘স্লিপি জো’ বলে ডেকে থাকেন ট্রাম্প। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হলে করের বোঝা বাড়বে বলেও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে সতর্ক করেছেন ট্রাম্প। বাইডেনের সীমান্ত নীতিকেও বরাবর আক্রমণ করে এসেছেন তিনি।
তবে শনিবার ডেলাওয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বাইডেনও ট্রাম্পকে খোঁচা দিয়েই বলেছেন, ‘দেশে এখন নেতৃত্বের বড্ড অভাব। এমন এক জননেতা আমাদের প্রয়োজন, যিনি গোটা দেশকে সঙ্ঘবদ্ধ করবেন, যিনি সবাইকে সবার সঙ্গে একাট্টা করবেন।’
Discussion about this post