আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থানবার্গ বলেছেন, বিশ্বের উচিত করোনাভাইরাস পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং একইরকমের তাগিদ নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকাএ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। থানবার্গ মনে করেন, এককভাবে কোনও ‘সবুজ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা’ তৈরি করে সংকটের সমাধান করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত পদক্ষেপ।
২০১৮ সালে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে অভিনব কায়দায় আন্দোলন শুরু করে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসেন তৎকালীন ১৬ বছর বয়সী কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ। ওই বছর ‘ইয়ুথ স্ট্রাইক’ নামক সে আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রতি শুক্রবার সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান নেওয়া শুরু করেছিলেন তিনি। তার এই অবস্থানের মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে বেগবান হয় জলবায়ু আন্দোলন। তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুনিয়াজুড়ে এই আন্দোলনে শামিল হন লাখ লাখ মানুষ। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ অধিবেশনেও জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি।
সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে থানবার্গ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যে মাত্রায় কার্বন নিঃসরণ কমানো প্রয়োজন, তা করতে গেলে মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। আর এর শুরুটা করতে হবে উন্নত বিশ্বে। তবে থানবার্গের আশঙ্কা, বিশ্বনেতারা তা করতে চাইবে না। বরং তারা কার্বন নিঃসরণের বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করবে।
থানবার্গ মনে করেন সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন ও ব্ল্যাকস লাইভ ম্যাটারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মানুষ সোচ্চার হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘মানুষ উপলব্ধি করতে শুরু করেছে যে, আমরা এসব জিনিস থেকে চোখ সরিয়ে রাখতে পারি না। পর্দার আড়ালে এ ধরনের অবিচার হতে দিতে পারি না আমরা।’
করোনা মহামারি থেকে একটি ইতিবাচক বিষয় বেরিয়ে এসেছে বলে মনে করেন থানবার্গ। আর তা হলো, আন্তর্জাতিক সংকট কিভাবে মোকাবিলা করতে হবে তার শিক্ষা পাওয়া গেছে। সুইডিশ এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘এটি (করোনা মহামারি) দেখিয়েছে, সংকটের সময়ে তোমাকে ব্যবস্থা নিতে হবে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রয়োগ করতে হবে।’
তবে ক্ষমতাশালদের সদিচ্ছার ব্যাপারে থানবার্গ এখন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। তার মনে হচ্ছে, রাজনীতিবিদরা এখন বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতামত শোনাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। ‘হঠাৎ করে ক্ষমতাশালী লোকজন বলছে যে তাদের যা করা প্রয়োজন, তা তারা করবে। কারণ মানুষের জীবন নিয়ে দাম কষাকষি করা যায় না।’
এরপরও বিশ্বের তপমাত্রা বৃদ্ধির হার নিরাপদ সীমার মধ্যে রাখার মতো আমাদের সক্ষমতা আছে কিনা সে ব্যাপারে এখনও গভীরভাবে সংশয়ী থানবার্গ। তিনি বলেন, বিশ্বনেতারা কার্বন নিঃসরণের হার যে পর্যায়ে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা পূরণ করলেও এখনও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারের বিপর্যয়পূর্ণ অবস্থাতেই থেকে যাচ্ছে বিশ্ব।
Discussion about this post