অনলাইন ডেস্ক
সাগর থেকে উদ্ধার করা প্রায় একশ’ রোহিঙ্গাকে আবারও সাগরে ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের স্থানীয় প্রশাসন। তবে ওই এলাকার জেলেদের প্রতিবাদের মুখে তা সম্ভব হয়নি।
সপ্তাহের শুরুতে ৭৯ জন নারী ও শিশুসহ শ’খানেক রোহিঙ্গা বহনকারী একটি নৌকা উদ্ধার করে আচেহ প্রদেশের জেলেরা। এরপর তাদের উপকূলের কাছাকাছি সাগরে একটি জায়গায় রাখা হয়েছিল। করোনার কারণ দেখিয়ে স্থানীয় প্রশাসন তাদের তীরে ভিড়তে দিতে চায়নি। তাই একটি নতুন নৌকায় খাবার আর গ্যাসোলিন দিয়ে রোহিঙ্গাদের আবারও সাগরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছিল।
বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় জেলেরা প্রতিবাদ শুরু করে। তাদের প্রতিবাদের মুখে বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের তীরে নামতে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর তাদের নিজেদের গ্রামে নিয়ে যায় জেলেরা। সেখানেই তাদের দেখাশোনা করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলে হামদানি ইয়াকব।
তিনি বলেন, ‘এটা মানবিক বিষয়। এটা আমাদের উত্তর আচেহর জেলে সমাজের ঐতিহ্যও বলতে পারেন। আমরা আশা করছি, রোহিঙ্গাদের আমাদের গ্রামে দেখাশোনা করা হবে।’
সাইফুল আমরি নামের আরেক জেলে বলেন, ‘সরকার যদি না পারে তাহলে আমরা জেলে সমাজ তাদের সহায়তা করবো। কারণ আমরা মানুষ, তারাও (রোহিঙ্গা শরণার্থীরা) মানুষ এবং আমাদের হৃদয় আছে।’
মিয়ানমারে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় খোঁজে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে থাকা অনেক রোহিঙ্গাও অপেক্ষাকৃত উন্নত জীবনের আশায় নৌকায় করে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া যেতে আগ্রহী। কিন্তু করোনার কারণে এসব দেশ সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের নৌকা তীরে ভিড়তে দিচ্ছে না। ফলে দীর্ঘদিন সাগরে ভেসে থেকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে রাষ্ট্রহীন এ জনগোষ্ঠীর বহু মানুষ।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন শুক্রবার বলেছেন, তার দেশের পক্ষে আর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। করোনার কারণে দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়াকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে টেলিকনফারেন্সে যোগ দিয়ে নিজ প্রশাসনের এমন অবস্থানের জানান দেন তিনি। সূত্র: ডিডব্লিউ।
Discussion about this post