আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আবারও ভারতের জন্য গর্বের মুহূর্ত তৈরি করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার ঐতিহ্যবাহী শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন এই কৃতি বাঙালি। রোববার ফ্রাঙ্কফুর্টের বিখ্যাত পাউল গির্জায় বিশিষ্ট অতিথিদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কারের জন্যে অর্মত্য সেনের নাম ঘোষণা করা হয়।
১৯৫০ সাল থেকে বিশ্বের বিখ্যাত ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় জার্মান বই প্রকাশক ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে এই পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে।পুরস্কার প্রদানকারী কমিটির বিচারকরা বলছেন, চলতি বছর ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা থেকে ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেনকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
বিচারকরা জানিয়েছেন, গত কয়েক দশক ধরে বিশ্বে ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলে তা মোকাবিলার জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে চলেছেন অমর্ত্য সেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে একনাগাড়ে লড়ে চলেছেন এই অর্থনীতিবিদ। তার কাজ কখনও প্রাসঙ্গিকতা হারাতে পারে না।
অমর্ত্য সেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি হচ্ছে সামাজিক সমৃদ্ধি কেবল অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রেই নয়, উন্নয়নের সুযোগের ক্ষেত্রে বিশেষত দুর্বলদের ক্ষেত্রেও পরিমাপ করা উচিত। পুরস্কার প্রদানের আগে বিচারকরা বলেন, অমর্ত্য সেন তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, দারিদ্র, ক্ষুধা ও রোগ থেকে মুক্ত হতে গণতান্ত্রিক কাঠামো কীভাবে সম্পর্কিত। সমাজ বিকাশের সূচক সক্ষমতার ধারণাগুলো তিনি পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন। এর ভিত্তিতে মানুষের উন্নয়ন সম্ভব।
বস্তুত উদার রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য ১৯৯৮ সালে অমর্ত্য সেন ব্যাংক অব সুইডেন পুরস্কার (অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার হিসেবে পরিচিত) লাভ করেন। অমর্ত্য সেন জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য মানব উন্নয়ন সূচক আবিষ্কার করেছেন। তিনিই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হয়েও ন্যাশনাল হিউম্যানিটিস মেডেলে ভূষিত হয়েছেন।
বর্তমানে অমর্ত্য সেন রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে। করোনার কারণে অমর্ত্য সেন ফ্রাঙ্কফুর্টের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। অনুষ্ঠানটির প্রধান অতিথি ও জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টেইনমেয়ারও অমর্ত্য সেনের বিষয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
Discussion about this post