আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই অবস্থানের কথা জানান। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এখবর জানিয়েছে।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইরানের একটি পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, তেহরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমিয়ে আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করতে দেবে বলে একমত হয়েছিল। এর বিনিময়ে তেহরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হয়।
ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ওবামা আমলে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলের পর এ ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে যান তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইরানকে নতুন একটি চুক্তিতে আসার জন্য আলোচনা করতে চাপ দেন। একইসঙ্গে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে ট্রাম্প ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।
নির্বাচনি প্রচারণায় ইরানের পরমাণু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন। সাবেক ট্রাম্প প্রশাসন এ চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নেন। বাইডেন সমঝোতায় ফেরার কথা বললেও অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ইরানের আঞ্চলিক কার্যক্রম ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখার তাগিদ দিয়েছিলেন।
ব্রিটিশ, ফরাসী এবং জার্মান সহযোগীদের সাথে এক ভিডিও বৈঠকের সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এ পরিকল্পনার কথা জানান। ব্লিংকেন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন চুক্তিতে পুনরায় ফিরবে যদি ইরান তা মেনে চলে।
চার দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ইরান কঠোরভাবে চুক্তি মেনে চললে, যুক্তরাষ্ট্র একই কাজ করবে এবং এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে কোনও আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাবে। ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমন বৈঠক হলে আমরা সেখানে উপস্থিত থাকব।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এমন বৈঠক আয়োজনের জন্য প্রস্তুত আছেন এমন ইঙ্গিত দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আলোচনায় বসার প্রস্তুতির কথা জানানো হলো।
লন্ডন, প্যারিস এবং বার্লিন তেহরানের সাথে ফের কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ার বাইডেনের ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন ওয়াশিংটনের পক্ষে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে আসার পর এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপ করে। এরপর ২০১৯ সাল থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মকাণ্ডে গতি আনে ইরান। যা চুক্তির লঙ্ঘন।
Discussion about this post