আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের জেরে এর আগে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টসহ বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার দেশটির একাধিক মন্ত্রণালয়ের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দফতর। শুধু তাই নয়, ‘মিয়ানমার ইকোনমিক করপোরেশন’ ও ‘মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস পাবলিক কোম্পানি’ নামে দুটি সরকারি সংস্থাকেও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত করেছে বাইডেন প্রশাসন।
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে ‘টাটমাডাও’ বা বার্মিজ সেনার একাধিক কর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হবে। একই সঙ্গে মিয়ানমারে স্বাস্থ্য ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সরঞ্জাম ছাড়া অন্য পণ্যের রফতানি বন্ধ করতে পারে ওয়াশিংটন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। বর্তমানে সামরিক সরকারের কাছে আটক রয়েছেন গত নভেম্বরে বিজয়ী দল এনএলডি’র শীর্ষ নেতা অং সান সু চিসহ নির্বাচিত সরকারের প্রেসিডেন্ট এবং অধিকাংশ মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতা।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারির পর ‘গণতন্ত্র রক্ষায়’ একই পথে হাঁটে যুক্তরাজ্য ও কানাডা। সেনা অভ্যুত্থানে জড়িত মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারাও।
সামরিক অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, শ্রমিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের পেশাজীবীরা কাজে ইস্তফা দিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করেন। শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ অত্যন্ত সহিংসভাবে দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে সামরিক সরকার।
গত বুধবার পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা মিয়ানমারের কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর তাজা গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত ৩৮ জন মারা যান। অভ্যুত্থানের পর গতকালই ছিল দেশটিতে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন। এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী।
Discussion about this post