আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারে অস্ত্র বিক্রির ওপর গৃহীত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির জান্তা সরকার। শনিবার এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বর্মি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রস্তাব মেনে চলার কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। ‘একপাক্ষিক অভিযোগ ও ভুল ধারণার’ ভিত্তিতে এটি করা হয়েছে।
প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মিয়ানমারের তরফে জাতিসংঘ মহাসচিব এবং সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্টকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৮ জুন শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবটিতে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের ঘটনায় জান্তা সরকারের নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে অং সান সু চি-সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। আইনগতভাবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব মানা বাধ্যতামূলক না হলেও, রাজনৈতিকভাবে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন স্কোরানের বার্গেনার সাধারণ পরিষদে বলেছেন, ‘বড় ধরনের গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা সেখানে বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ কমে আসছে।’
এই প্রস্তাবের পক্ষে সাধারণ পরিষদের ১১৯টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। শুধুমাত্র বেলারুশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ৩৬টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। এর মধ্যে মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করা দুই দেশ চীন ও রাশিয়ার নাম রয়েছে। বাংলাদেশও এ প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে কোনও কোনও দেশের প্রতিনিধি বলছেন, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। অন্যরা বলছেন, এই প্রস্তাবে চার বছর আগে মিয়ানমারের ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে বিতাড়িত করার বিষয়ে কোনও কথা বলা হয়নি।
জাতিসংঘে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ওলফ স্কোগ বলেছেন, ‘এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিজেদের জনগণের ওপর সহিংসতাকে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে আড়াল থেকে এসব বিষয় বিশ্বের নজরে আনা হয়েছে।’ মিয়ানমারের জাতিসংঘ বিষয়ক দূত কাইউ মোয়ে তুন, যিনি জাতিসংঘে দেশটির নির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তিনি এই প্রস্তাব পাস করতে এতো সময় লাগায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে একে ‘দুর্বল প্রস্তাব’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সূত্র: বিবিসি।
Discussion about this post