আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গত দুই দশক ধরে যুদ্ধের ময়দানে যত মার্কিন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন, তার চেয়ে অন্তত চারগুণ বেশি মারা গেছেন আত্মহত্যা করে। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। সাম্প্রতিক ব্রাউন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে দায়িত্বরত ও অবসরপ্রাপ্ত মিলিয়ে আনুমানিক ৩০ হজার ১৭৭ জন মার্কিন সেনা আত্মহত্যা করেছেন। বিপরীতে যুদ্ধের ময়দানে প্রাণ গেছে ৭ হাজার ৫৭ জনের।
গত ২০ বছরে আত্মহত্যাকারী মার্কিন সেনাদের মধ্যে প্রবীণের সংখ্যা অন্তত ২২ হাজার ২৬১ জন। আর ‘অ্যাকটিভ ডিউটি মেম্বার’ হিসেবে আত্মহত্যা করেছেন ৫ হাজার ১১৬ জন। ন্যাশনাল গার্ড ও রিজার্ভ বাহিনীর প্রথম ১০ বছরের হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গার্ডের ১ হাজার ১৯৩ জন এবং রিজার্ভের ১ হাজার ৬০৭ জন নিজের প্রাণ নিয়েছেন।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, আত্মহত্যার এই প্রবণতা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। প্রবীণ এবং সক্রিয় সেনা উভয়ের আত্মহত্যার ক্রমবর্ধমান হার সাধারণ জনগণের আত্মহত্যার হারকেও চেয়ে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রতিবেদনের লেখক থমাস ‘বেন’ সুট এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনে আত্মহত্যা করা সেনা ৩০ হাজার ১৭৭ জন বলা হলেও এর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। তার বিশ্বাস, জনসাধারণের অবহেলাই প্রবীণ সেনাদের আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ।
এর বাকি কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের ব্যবহার বৃদ্ধিতে মানসিক আঘাত, আঘাতজনিত মানসিক চাপ এবং আত্মহত্যাপ্রবণতার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য মানসিক কারণ।
গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক সেনাই প্রয়োজনমতো চিকিৎসা পান না। এছাড়া, চাকরি হারানোর ভয়ে অনেকেই মানসিক সমস্যার কথা গোপন করেন। এগুলো তাদের আত্মঘাতী আচরণের প্রতি আরও অরক্ষিত করে তোলে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের এক মুখপাত্র বলেছেন, এক্ষেত্রে এ ধরনের আত্মহত্যা প্রবণতা প্রতিরোধে সমন্বিত পদক্ষেপ অবশ্যই প্রয়োজন।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
Discussion about this post