আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নানা নাটকীয়তার পর সবশেষে বিশ্বকে রক্ষায় জলবায়ু চুক্তিতে সম্মত হয়েছে দেশগুলো। এছাড়া এই চুক্তিতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য প্রথমবারের মতো জীবাশ্ম জ্বালানিকে দায়ী করা হয়েছে। এমনকি জীবাশ্ম জ্বালানি কয়লার ব্যবহার কমানোর পরিকল্পনায়ও একমত হয়েছে দেশগুলো।
অবশ্য কয়লা নির্ভর দেশগুলো শেষ মুহূর্তেও চুক্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছে। রোববার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, জলবায়ুর বিপর্যয় মোকাবিলায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার অঙ্গীকারকে এখনও জীবিত রাখায় এই চুক্তিকে প্রসংশা করা হচ্ছে। তবে সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিদের বেশিরভাগই আশা করছেন যে, তারা এখান থেকে আরও বেশি কিছু নিয়ে আসতে পারবেন।
গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তি অনুমোদনের চূড়ান্ত আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ জলবায়ু দূত জন কেরি বলেন, ‘এটি যদি ভালো আলোচনা হয়, তাহলে সবগুলো পক্ষই অস্বস্তিতে আছে। এবং আমি মনে করি, এখন পর্যন্ত বেশ ভালো আলোচনা হয়েছে।’
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গ্লাসগো সম্মেলনের চূড়ান্ত চুক্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও অর্থ সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। তবে এসব অঙ্গীকার বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করা হচ্ছে।
নতুন এই চুক্তির আওতায় সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো আগামী বছরও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মূলত বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতেই এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশগুলো।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে কয়লার ব্যবহার কমানোর প্রতিশ্রুতি, উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর বিষয়টিও চুক্তিতে রয়েছে। এর পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন প্রায় অর্ধেকে কমিয়ে আনা থেকে শুরু করে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য বিশ্বের সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলোর রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থতার জন্য কোনো নির্দিষ্ট দেশকে দায়ী করার নিয়ম প্রথমবারের মতো ঠিক করা হয়েছে।
কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনের ব্রিটিশ সভাপতি অলোক শর্মা শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তি ইস্যুতে অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। সেখানে তিনি বলেন, এখন থেকে কঠিন কাজ শুরু হলো। আমরা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্য টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি।
একইসঙ্গে কার্বন নিঃসরণ কমানো, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর অঙ্গীকার এবং সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধ করতে বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের সম্মত হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
Discussion about this post