আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কাজাখস্তানের সরকারি বাহিনী জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে । পথে পথে কামান ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়ার পর অভিযান জোরদার করা হয়েছে। জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারির মধ্যে জোরালো অভিযানে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এরই মধ্যে আন্দোলন শুরুর পর বরখাস্ত হওয়া গোয়েন্দাপ্রধান করিম মাসিমভকে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশটিতে রুশ সেনা পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, সংকট সমাধানে কাজাখ কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা ছিল। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
পরিস্থিতি নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতার মধ্যে সংকট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পরিবেশ শান্ত করতে কাজাখ নেতাকে পরামর্শ দিয়েছেন পুতিন।
জ্বালানিসমৃদ্ধ মধ্য এশিয়ার দেশটিতে সপ্তাহব্যাপী চলা সহিংসতায় অন্তত ৪৪ নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের দখলে থাকা প্রধান শহর আলমাতিসহ বিভিন্ন সরকারি ভবনের পুনঃনিয়ন্ত্রণ নিতে চালানো অভিযানে তারা নিহত হয়েছেন। ১ জানুয়ারি এলপিজির দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়। চাপের মুখে সরকারের পতন এবং জ্বালানির পূর্বমূল্য নিশ্চিতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় করিম মাসিমভকেও অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়। এরই মধ্যে বিক্ষোভ দমনে সাবেক সোভিয়েতভুক্ত পাঁচ দেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার সামরিক জোট কালেকটিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সহায়তা চাওয়ার পর দেশটিতে প্রায় আড়াই হাজার সেনা পাঠায় মস্কো।
শনিবার জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (কেএনবি) এক বিবৃতিতে জানায়, গুরুতর বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে তদন্ত শুরুর পর কাজাখস্তানের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেসিডেন্ট নূর সুলতান নাজারবায়েভের মিত্র হিসেবে পরিচিত করিম মাসিমভকে বৃহস্পতিবার আটক করা হয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘রুশ সেনারা আদৌ কাজাখস্তান ছাড়বে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান ওয়াশিংটন। সাম্প্রতিক ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, রুশ সেনারা একবার কোথাও ঢুকলে মাঝেমধ্যে তাদের সেখান থেকে বের করা কঠিন হয়ে পড়ে।’ ওয়াশিংটনের এমন মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে মস্কো।
Discussion about this post