আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনা মহামারির শুরু থেকেই বিশ্বের সাপ্লাই চেনে সমস্যা চলছে। পণ্য সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছেন উৎপাদক থেকে শুরু করে বিক্রেতারা। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য ও সেবার দাম বেড়েছে রকেটগতিতে।
গত ডিসেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে নিত্যপণ্য ও সেবার দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ। এটি যুক্তরাষ্ট্রে চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির হার। এ নিয়ে টানা তৃতীয় মাসের মতো দেশটির মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ওপর রয়েছে। এর ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফেডারেল রিজার্ভের ওপর সুদের হার বাড়াতে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
২০২১ সালে মহামারির সময় যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি, গ্যাস, খাবার ও আসবাবপত্রের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিপুল পরিমাণ সরকারি প্রণোদনা এবং অতিনিম্ন সুদের হার জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করেছিল।
এ বিষয়ে দেশটির শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, অস্থিরতার মধ্যে থাকা খাদ্য ও গ্যাসের দাম বাদ দিয়ে ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এ হার কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। নভেম্বরের তুলনায় সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এ হার আগের মাসের দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ার চেয়ে কম।
তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বজুড়েই মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী। ডিসেম্বরে ইউরো জোনের ১৯টি দেশে মূল্যস্ফীতি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে।
কাঁচামালের দাম বাড়ার পাশাপাশি মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে কর্মী ঘাটতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। বেতন বাড়িয়ে কর্মীদের ধরে রাখতে এবং নতুন কর্মী আকৃষ্টের চেষ্টা করছে সংস্থাগুলো। তবে বেতন বাড়লেও পণ্য ও পরিসেবার উচ্চ দামের কারণে কর্মীরা খুব বেশি লাভবান হচ্ছে না। এক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে পড়েছে।
আশির দশকের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এমন মূল্যস্ফীতি দেখা যায়নি। ১৯৮০ সালে দেশটিতে পণ্য ও সেবার মূল্য ২০ শতাংশ বেড়েছিল।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতির সবচেয়ে বড় কারণ চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে অমিল। চিপ ঘাটতির কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় গাড়ির দাম বেড়ে যায়। পাশাপাশি আসবাবপত্রের দাম আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়েছে।
Discussion about this post