আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮ হাজার ৫শ সেনা উচ্চ সতর্কতায় অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। যে কোনো সময় প্রয়োজন হলেই যেন তারা মাঠে নামতে পারেন সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার এক লাখ সেনা অবস্থান করছে। যদিও রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে যে, ইউক্রেনে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো পরিকল্পাই তাদের নেই।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে এক ভিডিও কলে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা শক্তিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে পেন্টাগন এখনও জানায়নি যে, তারা ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করবে কি না। তারা বলছে, এটা তখনই ঘটবে যখন ন্যাটো সামরিক জোট দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল বাহিনীকে সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নেবে। অথবা যদি অন্য পরিস্থিতি তৈরি হয় তবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিন্তু এখনই ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানানো হয়েছে। তবে ডেনমার্ক, স্পেন, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসহ আরও কিছু ন্যাটোভুক্ত দেশ ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো আরো বলছে, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। তারা বাড়তি সৈন্য প্রস্তত রাখছে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করছে।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়াকে তার সীমানাভুক্ত করার পর ন্যাটো পূর্ব ইউরোপে তার সদস্য দেশগুলোতে উপস্থিতি বাড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ড।
এদিকে রাশিয়ার অভিযোগ, ন্যাটো ইচ্ছাকৃত উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। ন্যাটো সামরিক জোটকে রাশিয়া একটি নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এবং মস্কোর দাবি ইউক্রেনসহ পূর্ব ইউরোপে নতুন করে এই জোটের সম্প্রসারণ বন্ধ করার ব্যাপারে ন্যাটোকে আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ন্যাটোর সম্প্রসারণ নয় বরং, রাশিয়ার আগ্রাসনই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে আনুমানিক এক লাখ রুশ সৈন্য মোতায়েন করার পটভূমিতে ন্যাটো প্রধান ইউরোপে নতুন লড়াই বাধার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন।
অপরদিকে যুদ্ধের প্রস্তুতিতে সহায়তার জন্য শনিবার যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৯০ টন ওজনের ‘মারণাস্ত্র’ ইউক্রেনে পাঠিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সম্মুখ রণাঙ্গনে প্রতিরোধী যুদ্ধ সরঞ্জাম।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হিসাবনিকাশ বিবেচনায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র তার পদক্ষেপগুলো নির্ধারণ করছে এবং ইউক্রেনে প্রতিরক্ষা জোরদার করতে তারা আরও সামরিক সহায়তা পাঠাবে।
রোববার ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর পুতিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে, তিনি ইউক্রেন সরকারে নেতৃত্ব দেবার জন্য মস্কোপন্থী এক ব্যক্তিকে সেখানে ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা করছেন। ব্রিটিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ব্যক্তি ইউক্রেনের সাবেক একজন এমপি এবং তার নাম ইয়েভহেন মুরায়েভ। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মুরায়েভ এ ধরনের দাবিকে নির্বোধ বলে উল্লেখ করেছেন।
Discussion about this post