অনলাইন ডেস্ক
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। উভয়পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে বৃহস্পতিবার উদ্ভূত পরিস্থিতির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল দ্বিতীয় দফার বৈঠক শেষ করেছেন। প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল অঞ্চলের অজ্ঞাত এক স্থানে তিন ঘণ্টা ধরে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে যুদ্ধবিরতির কোনো ঘোষণা না এলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলো থেকে শান্তিপূর্ণভাবে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য যৌথভাবে মানবিক করিডোর খুলে দিতে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ। একই সঙ্গে ওই সব এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের জন্য জরুরি ওষুধ ও খাবার সরবরাহের বিষয়টিও নিশ্চিত করবে দুই দেশ। পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আগামীতে উভয়পক্ষ আবারও বসবে বলে সম্মত হয়েছে। সূত্র- সিএনএন, বিবিসি ও আল-জাজিরা।
তবে, বৈঠক থেকে ভালো কোনো সমাধান আসেনি বলে জানিয়েছেন একজন ইউক্রেনীয় আলোচক। তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষ হয়েছে। এটি ইউক্রেনের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনেনি।
এক টুইট বার্তায় ইউক্রেনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিখাইল পোদোলিয়াক বলেন, দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষ হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, ইউক্রেনের স্বার্থে প্রয়োজন এমন কোনো ফল এখনও অর্জিত হয়নি। শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণভাবে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য যৌথভাবে মানবিক করিডোর খুলে দিতে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ। একই সঙ্গে যুদ্ধকবলিত এলাকায় আটকে পড়া নাগরিকদের জরুরি ওষুধ ও খাবার সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করবে দুই দেশ।
কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আমরা জোর দিয়েছি। সামনে আরও আলোচনা হবে বলেও জানান মিখাইল পোদোলিয়াক।
এদিকে, রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি দেশটির গণমাধ্যমকে বলেন, উভয়পক্ষ বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক করিডোর খুলে দিতে সম্মত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এগুলো হচ্ছে- সামরিক, আন্তর্জাতিক ও মানবিক। এর মধ্যে কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। আজ আমরা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি, তা হলো- যুদ্ধকবলিত অঞ্চলে নিজেদের বেসামরিক নাগরিকদের খুঁজে বের করা এবং তাদের উদ্ধার করা। এজন্য সম্ভাব্য অস্থায়ী একটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আমরা সম্মত হয়েছি।
এর আগে, গত সোমবার বেলারুশের গোমেল অঞ্চলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম দফার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কোনো ধরনের চুক্তিতে পৌঁছানো ছাড়াই ওই বৈঠক শেষ হয় এবং দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসতে রাজি হয় উভয়পক্ষ।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কিয়েভের প্রতিনিধিদলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকজি রেজনিকোভ, প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইল পোদোলিয়াক, ক্ষমতাসীন সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল পার্টির একাংশের প্রধান ডেভিড আরাখামিয়া, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলে তোচিৎস্কিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ সহযোগী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু হয়। অভিযানের সপ্তম দিন বুধবার রাশিয়া জানায়, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে তাদের ৪৯৮ সেনা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৬০০ জন। ইউক্রেনের দুই হাজার ৮৭০ সেনা নিহত এবং তিন হাজার ৭০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। বন্দি হয়েছে ৫৭২ ইউক্রেনীয় সেনা।
অন্যদিকে ইউক্রেনের দাবি, তাদের প্রতিরোধ যুদ্ধে পাঁচ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
Discussion about this post