করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে বিভিন্ন দেশ লকডাউনের কবলে পড়ে বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং দেখা দিয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার চরম ঝুঁকি। সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এক প্রতিবেদনে এ ভয়াবহতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। খবর সিএনএনের।
এফএও জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে অনেক দেশে ভোক্তারা খাদ্যপণ্যের সরবরাহ সঙ্কটে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ঝুঁকেছেন অতিরিক্ত খাবার ক্রয়ে, যা তারা আপৎকালের জন্য মজুদ করছেন। সুপারশপগুলোতে খাদ্যপণ্যের মজুদও রয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়বে। কৃষক, কৃষিপণ্য, প্রক্রিয়াকরণ, জাহাজিকরণ, খুচরা বিক্রি সবই জটিলতার জালে আটকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এই মুহূর্তে খাদ্য সঙ্কট নেই, মহামারির মধ্যে জনগণকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার সরবরাহের তাগিদে খাদ্যপণ্য রফতানি বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে বিভিন্ন দেশ। একই পথে হাঁটছে এশিয়ার শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশগুলোও। ফলে এ অঞ্চল থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে অনেক দেশ চরম খাদ্য সঙ্কটে পড়বে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে এফএও।
এফএওর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ডেভিড ডাউই বলেন, খাদ্য প্রাপ্যতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে তা রফতানি নিষেধাজ্ঞা ডেকে আনতে পারে। এর ফলে বিশ্ববাজারে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করার সময় দেশগুলোকে বাণিজ্য সম্পর্কিত পদক্ষেপ সতর্কভাবে নিতে হবে। যাতে খাদ্য সরবরাহ কোনোভাবে ব্যাহত না হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ, সীমান্ত বন্ধ, বিমান চলাচল ও স্থলবন্দর বন্ধ, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি কারণে বাজারে খাদ্যের সঙ্কট তৈরি করতে পারে। লকডাউনের কারণে কৃষি ও খাদ্য শিল্পের শ্রমিকদের চলাচলে বাধাগ্রস্ত করা বিরূপ ফল বয়ে আনতে পারে। কিছু দেশে সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় খাদ্যবোঝাই কনটেইনার, ওষুধ গন্তব্যে পৌঁছা বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে পচনশীল খাবারের পরিবহনে অপচয় বাড়বে। সব মিলিয়ে খাদ্যবর্জ্য বেড়ে যাবে, দেখা দেবে খাদ্য সঙ্কট। এতে বিশ্বব্যাপী দরিদ্র মানুষগুলো খাদ্যের অভাবে পড়বে।
Discussion about this post