আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতি ফের আগের অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আদেশ আবারও আগের অবস্থানে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দেশে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা। এক বছরের ব্যবধানে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৬। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টিতে। সেই হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ৮ হাজার ৮৬টিতে।
করোনা মহামারির সময়ে ২০২০ সালের মার্চে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি। মহামারির মধ্যেই একই বছরের সেপ্টেম্বরে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়ে এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টিতে। শুধু করোনা মহামারির ২১ মাসে কোটিপতি হিসাবধারী অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ১৯ হাজার ৩৫১টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। এসব হিসাবে অর্থ জমার পরিমাণ ১৫ লাখ ১২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু কোটি টাকার বেশি হিসাবে জমার পরিমাণ ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে মোট আমানতের স্থিতির পরিমাণ ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। একই সময় শেষে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবগুলোয় জমার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ হাজার ৮৮৩ টিতে, যেখানে জমার পরিমাণ এক লাখ ৬৬ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। পাঁচ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকার মধ্যে ১৭ হাজার ৯টি হিসাব রয়েছে, যেখানে জমার পরিমাণ এক লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। ২০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার ওপর মোট হিসাবধারীর সংখ্যা ৫ হাজার ৮৪টি, যেখানে জমার পরিমাণ ৩ লাখ ২৮ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল পাঁচজন। ১৯৭৫ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ জনে। ১৯৮০ সাল শেষে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি, ১৯৯০ সালে ৯৪৩, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭ এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টিতে।
Discussion about this post