আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পশ্চিমা বন্ধু দেশগুলোর কাছে আরও অস্ত্র এবং মস্কোর বিরুদ্ধে বড় নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে কিয়েভ। তা না হলে পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ান হামলার মাত্রা ন্যাটো সদস্যদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেবে বলে মনে করেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা।
বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে কুলেবা বলেন, ‘(রাশিয়াকে ঠেকাতে) আমাদের অস্ত্র প্রয়োজন। আপনারা আমাদের দ্রুত সাহায্য করুন না হলে অনেক লোক মারা যাবে।’
অভিযানরত রুশ বাহিনীকে প্রতিহত করতে এর আগে ন্যাটোর কাছে বিমান, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, গোলাবারুদ ও সাঁজোয়া যান চেয়েছে ইউক্রেন। বৃহস্পতবারের বৈঠকে ফের তা স্মরণ করিয়ে দেন কুলেবা এবং বলেন, ‘ন্যাটো আমাদের অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং এই সহায়তা যে আসবে- তাতে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই।’
‘কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হলো, কখন আসবে (সহায়তা)?’
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল ডনবাসে (দনেতস্ক ও লুহানস্ক) শিগগিরই রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর তীব্র লড়াই শুরু হবে উল্লেখ করে ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশে কুলেবা বলেন, ‘ডনবাসে শিগগিরই বড় ধরনের যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে। হাজার হাজার ট্যাংক, সাঁজোয় যান, যুদ্ধবিমান ও গোলাবারুদ তখন ব্যবহার হবে এবং সেই যুদ্ধের মাত্রা এত ব্যাপক হবে, যে আপনাদের মনে পড়বে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ভয়াবহ পরিস্থিতির ইতিহাস।’
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলোর এই সামরিক জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইতোমধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে সমর্থন ও অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও এই সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে।’
ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বন্দ্বের সূত্রপাত এই ন্যাটোকে ঘিরেই। ২০০৮ সালে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়।
ইউক্রেনেকে ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহার করতে বলেছিল রাশিয়া; কিন্তু ইউক্রেন তাতে আমল না দেওয়ায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। অভিযান শুরুর দুই দিন আগে, ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এই দুই ভূখণ্ডকেই একত্রে ডনবাস রিপাবলিক বলা হয়।’
ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনাদের ডনবাসে সরিয়ে আনছে রাশিয়া। দনেতস্ক ও লুহানস্কে দিন দিন তীব্র হচ্ছে রুশ-ইউক্রেন সেনাদের লড়াই।
Discussion about this post