তিনটি শরিকদলের ১৬ জন আইনপ্রণেতা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এরইমধ্যে তারা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সর্বদলীয় সরকার গঠনের ব্যাপারে। তবে বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
জাথিকা হেলা উরুমায়া পার্টির প্রধান উদয় গাম্মানপিলা বলেন, আমাদের প্রস্তাব হলো, সব দলের অংশগ্রহণে একটি কমিটি গঠন করা। সর্বদলীয় ওই কমিটি একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী নিয়োগ করলে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন তারা।
এর আগে রোববার (১০ এপ্রিল) তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (টিএনএ) জানায়, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পার্লামেন্টে বিরোধী সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলে তাতে দলটি সমর্থন দেবে।
২২৫ আসন বিশিষ্ট দেশটির পার্লামেন্টে সামাগি জনা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) ও তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের (টিএনএ) সমন্বয়ে আসন রয়েছে ৬৪টি। জোট গঠন করে ১৫০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করেছিল পদুজানা পেরামুনা দলের (এসএলপিপি) সরকার। কিন্তু সম্প্রতি জোটের ৪২ জন আইনপ্রণেতা পদত্যাগ করেন এবং নিজেদের স্বতন্ত্র বলে ঘোষণা দেন। এদিকে, ১৯ এপ্রিলের আগে বসছে না শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট।
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশটির সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। দিনকে দিন আরও বাড়ছে ঋণের বোঝা। খাদ্যপণ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গ কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যদিও অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ার পেছনে করোনা মহামারিকেই দুষছেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রেসিডেন্টসহ তিনি দেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে প্রতিটি মূহুর্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এসএলপিপি দলের নেতা গোতাবায়া রাজাপাকসে ২০১৯ সালে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তার দল। নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য সংবিধান সংশোধনও করেন তিনি। কিন্তু অভ্যন্তরীণ নানা কারণে সম্প্রতি দেশটির অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
খাদ্যপণ্যসহ সবধরনের জিনিসের দাম আকাশচুম্বী। গ্যাস, পানির তীব্র সংকট, এমনকি ফুরিয়ে আসছে হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সব ওষুধ। এসব কারণে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়াসহ তার বড়ভাই ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে কলম্বোর মানুষ। অর্থনীতির এ হেন অবস্থার জন্য সরকারকেই দায়ী করছেন আন্দোলনকারীরা।
সূত্র: রয়টার্স, পিটিআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
Discussion about this post