আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য করা হলে ওই অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী দিমিত্রি মেদভেদেভ। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় ১৩শ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে ফিনল্যান্ডের। তাদের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যতম শান্তিপ্রিয় দেশ বলে খ্যাত সুইডেন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার চিন্তা করছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন।
সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে ন্যাটোর উপস্থিতিকে বরাবরই হুমকি বলে মনে করে রাশিয়া। তাদের ইউক্রেন আক্রমণ করার অন্যতম কারণও এটি। এবার আরও দুই প্রতিবেশী ন্যাটোয় যোগ দিতে চলার খবরে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ।
তিনি বলেছেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিলে রাশিয়াকে বাল্টিক সাগর এলাকায় স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
এদিন পরোক্ষভাবে সম্ভাব্য পারমাণবিক হামলারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। মেদভেদেভ বলেছেন, এমনটি হলে ‘পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত’ বাল্টিক নিয়ে আর কোনো আলোচনা হবে না, অবশ্যই ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত রাশিয়া এমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি এবং নিতোও না। আমাদের যদি বাধ্য করা হয়… মনে রাখবেন, এই প্রস্তাব আমরা করিনি।
অবশ্য প্রতিবেশী দেশ লিথুয়ানিয়ার বক্তব্য, রাশিয়ার এমন হুমকি নতুন কিছু নয় এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অনেক আগেই কালিনিনগ্রাদ ছিটমহলে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করেছে মস্কো।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে পশ্চিমা সামরিক শক্তি সুসংহত করার লক্ষ্যে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাটো। এই জোটে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের অন্তর্ভুক্তি হতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতি হিসেবে ইউরোপের সবচেয়ে বড় কৌশলতগত পদক্ষেপ।
১৯১৭ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতালাভ করে ফিনল্যান্ড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তাদের মধ্যে আরও দুবার যুদ্ধ হয়, যাতে রাশিয়ার কাছে বেশ কিছু ভূখণ্ড হারায় ফিনিশরা। সেই তুলনায় সুইডেন অনেকটাই শান্তিপ্রিয়। গত ২০০ বছরে তারা কোনো যুদ্ধে লড়েনি। বরং তাদের পররাষ্ট্রনীতি গণতন্ত্র, বহুপাক্ষিক আলোচনা ও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে কথা বলে।
Discussion about this post