আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন প্রশাসনকে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার (ডব্লিউএইচও) অর্থায়ন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে সংস্থাটি ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
তিনি জাতিসংঘের এ সংস্থাটির বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনা এবং চীনে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ডব্লিউএইচও তা গোপন করেছিল বলে অভিযোগ করেন। সংস্থাটিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে ডব্লিউএইচওর বিরুদ্ধে ‘চীনকেন্দ্রিক’ হওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় তার কার্যক্রম নিয়ে সমালোচিত হচ্ছেন।
হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘করোনা ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি গোপন করা এবং এটি মোকাবিলায় গুরুতর অব্যবস্থাপনার পেছনে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার ভূমিকা মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং এ সময় আমি আমার প্রশাসনকে সংস্থাটির অর্থায়ন বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে ডব্লিউএইচও এবং তাকে অবশ্যই জিবাবদিহি করতে হবে।’
ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘এখন ডব্লিউএইচওর বরাদ্দ বাতিলের সময় নয়।’
সংস্থাটির সর্বাধিক বরাদ্দ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল চারশ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা সংস্থাটির সম্পূর্ণ বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ।
ডব্লিউএইচওর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে সংস্থাটিতে চীনের অবদান ছিল প্রায় ৭৬ মিলিয়ন ডলার এবং স্বেচ্ছাধীন বরাদ্দ ছিল প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার।
মহামারি মোকাবিলায় সহায়তার জন্য মার্চ মাসে ৬৭৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের আবেদন করে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এবং আরও অন্তত এক বিলিয়ন ডলারের জন্য আবেদনের পরিকল্পনা করছে তারা।
ট্রাম্প বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রের মহানুভবতার সম্ভাব্য সর্বোত্তম ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে আমরা।’
করোনা ভাইরাস মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৮ হাজার ৩৭৭ এবং মারা গেছেন ২৫ হাজার ৯৮১ জন।
ট্রাম্প বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা চীনে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণের কাজটি করতে পারলে এবং চীনের স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে অভিযোগ তুললে, প্রাদুর্ভাবটি খুব অল্প মৃত্যুতে উৎসেই দমন করা যেতো। এতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচতো এবং বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ক্ষতি এড়ানো যেতো। কিন্তু তার পরিবর্তে ডব্লিউএইচও স্বেচ্ছায় চীনের আশ্বাসে আস্থা রেখেছে এবং চীনা সরকারের কর্মকাণ্ডের পক্ষ নিয়েছে।’
তবে এর আগে ট্রাম্প নিজেই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় চীনের প্রশংসা করেছিলেন। গত ২৫ জানুয়ারি এক টুইটে তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় খুব কঠোর পরিশ্রম করছে চীন। তাদের প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছতার ব্যাপক কদর করে যুক্তরাষ্ট্র। এগুলো ভালো কাজ করবে। বিশেষ করে, মার্কিন নাগরিকদের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট শিকে ধন্যবাদ দিতে চাই আমি।’
Discussion about this post