আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের কারাবন্দি বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল সমর্থিত প্রার্থীরা সরকার গঠনের পরিকল্পনা করছেন বলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর একজন সিনিয়র সহকারী শনিবার জানিয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ না হলে সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করারও আহŸান জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের মোট আসন সংখ্যা ২৬৬টি। এর মাঝে ২৫৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বলেছে, ফলাফল ঘোষণা করা ২৫৬টি আসনের মধ্যে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৩টি আসনে জয়ী হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৩টি আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টিও ৫৪টি আসনে জয় পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বাকিগুলো ছোট কিছু দল জিতেছে।
মূলত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) দল হিসাবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
রয়টার্স বলছে, ইমরান খান এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উভয়ই শুক্রবার বিজয় ঘোষণা করেছেন। এই অবস্থায় কে পরবর্তী সরকার গঠন করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে, সেটিও আবার এমন এক সময়ে যখন দেশটিতে একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্রুত নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এমন অবস্থায় ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান গহর খান পাকিস্তানের ‘সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে’ তার দলের ম্যান্ডেটকে সম্মান করার আহŸান জানিয়েছেন। ব্যারিস্টার গহর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবী হিসেবেও কাজ করেন।
গোহর আরও বলেন, সংরক্ষিত আসনের পাশাপাশি কোন দলে যোগ দেওয়া হবে সে বিষয়ে শিগগিরই তারা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছবেন। যেসব আসনে ফলাফল আটকে দেওয়া হয়েছে, সেখানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করা হবে। কর্মীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, প্রতিবাদ একটি অধিকার, তবে তা হতে হবে শান্তিপূর্ণ। পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যে আসনগুলোয় জিতেছে সেগুলোয় তাদের পরাজিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর এখন পর্যন্ত সবগুলো আসনের ফল ঘোষণা করা হয়নি। ভোট হওয়া ২৬৫ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫৫ আসনের ফল জানা গেছে। এর মধ্যে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয় দেখানো হয়েছে ১০০ আসনে। নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) পেয়েছে ৭৩ আসন, বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪ আসন এবং অন্যান্য দল পেয়েছে ২৮টি (ফল: জিও টিভি)।
আর পাকিস্তানের নির্বাচনী আইনের অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ পেতে পারে না। মূলত ৭০টি আসন দলীয় শক্তি অনুযায়ী বন্টন করা হয়। এর মধ্যে ২০টি আসন পেতে পারে নওয়াজ শরিফের দল।
ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফি বুখারি রয়টার্সকে বলেছেন, চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরের দিনই ঘোষণা করা হবে যে, কোন দলীয় ব্যানারে তারা স্বতন্ত্রদের যোগ দিতে বলবে। মূলত পাকিস্তানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেরাই সরকার গঠন করতে পারে না এবং তাদের কোনও একটি দলে যোগ দিতে হবে।
Discussion about this post