Diploma in Medical Technology বা চিকিৎসা প্রযুক্তি বিদ্যা (প্যাথলজি) হল এক ধরনের বিশেষায়িত মেডিকেল ডিপ্লোমা কোর্স ।বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এই কোর্সটির অনুমোদন দিয়ে থাকে।অনুমোদনের পরে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (Bangladesh Technical Education Board) কোর্সটি পরিচালনা করে থাকে।
আমাদের দেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এর সংখ্যা যথেষ্ট নয়।রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যেখানে প্রায় ৭০% নির্ভর করে ল্যাবরেটরি টেস্টের উপর সেখানে বর্তমান ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্ট এর সংখ্যা অপ্রতুল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অদক্ষ ল্যাব টেকনিশিয়ান দিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা হচ্ছে যাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোন ডিগ্রি নেই।যা চিকিৎসা ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।এই অভাব পূরণ করার লক্ষে এবং চিকিৎসা সেবাকে নির্ভুল ভাবে পরিচালিত করার জন্য একজন ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্ট এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।একজন দক্ষ ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্ট নির্ভুল পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসার মান উন্নয়ন, সময় ও ব্যয় উভয় লাঘব করতে পারে।
ডিগ্রির কর্মক্ষেত্র:
সফলভাবে ল্যাবরেটরি টেকনোলজি কোর্স সম্পন্নকারীদের স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন বিভাগে কর্ম ক্ষেত্রের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।ল্যাবরেটরি টেকনোলজি কোর্স সম্পন্ন করার পর একজন টেকনোলজিস্ট বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ব্লাড ব্যাংক, ক্লিনিক, হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ হিসেবে বিভিন্ন পদে যোগদান করতে পারেন।
সরকারী পর্যায়ে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ যেমন-
- জেলা সদর হাসপাতাল
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- বিভিন্ন সরকারি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে
- যেমন- মেডিকেল কলেজ, ম্যাটস ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইন্সটিটিউট ও কলেজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, বিভিন্ন সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি।
- বেসরকারি পর্যায় কর্মক্ষেত্রের সুযোগ যেমন-
- বেসরকারি হাসপাতাল
- বেসরকারি ক্লিনিক
- বিভিন্ন এনজিও
- ডায়াগনস্টিক সেন্টার
- বিভিন্ন বেসরকারি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে
- যেমন- মেডিকেল কলেজ, ম্যাটস ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইন্সটিটিউট ও কলেজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, বিভিন্ন বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি।
- এছাড়াও নিজস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং কর্ম সংস্থান সৃষ্টি করা যায়।
এছাড়া বহিরবিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাল বেতনে কর্ম সংস্থান এবং উচ্চতর ডিগ্রির সুযোগ আছে ।
ভর্তির যোগ্যতা:
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড:প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ৮ বছর আগে যে কোন বিভাগ ও বোর্ড থেকে এস.এস.সি/দাখিল/ভোকেশনাল/ উন্মুক্তসহ সম-মানের পরীক্ষায় নূন্যতম জি.পি.এ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
কোর্স স্ট্রাকচার:
– তিন বছর একাডেমিক কোর্স (৬ সেমিস্টার।
– এক বছর ইন্টার্নশিপ কোর্স (২ সেমিস্টার)
কোর্স কারিকুলাম:
ল্যাবরেটরি টেকনোলজি কোর্সের শিক্ষার্থীরা মানবদেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গঠন ও কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা পায়। ক্ষুদ্র অণুজীব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে।যেমন Bacteria,Virus, Fungus, Protozoa,Parasites ইত্যাদি জীবাণুর আকার,আকৃতি, গঠন,রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা,কি কি রোগ সৃষ্টি করতে পারে, কিভাবে রোগ সৃষ্টি করে এবং কিভাবে অণুজীবকে ধ্বংস করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করে।মানব দেহের বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে এবং বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা যেমন রক্ত পরীক্ষা, প্রসাব পরীক্ষা, হরমোন পরীক্ষা, শরীরের বিভিন্ন তরল উপাদানের পরীক্ষা যেমন-CSF, Synovial fluid, Peritonial fluid, Pleural fluid, Body Cavity fluid, Sputum, Thyroite Aspyrate, Brain/Spine Biosy ইত্যাদি।
চিকিৎসাবিদ্যার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে কথা বলা, লেখা ও উচ্চারণের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়।
Discussion about this post