Diploma in Medical Technology বা চিকিৎসা প্রযুক্তি বিদ্যা (ফার্মেসী) হল এক ধরনের বিশেষায়িত মেডিকেল ডিপ্লোমা কোর্স।বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এই কোর্সটির অনুমোদন দিয়ে থাকে।অনুমোদনের পরে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (Bangladesh Technical Education Board) কোর্সটি পরিচালনা করে থাকে।আমাদের দেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট এর সংখ্যা যথেষ্ট নয়।বাংলাদেশে প্রতি বছর যে পরিমান ডিপ্লোমা ফার্মাসীষ্টদের চাহিদা রয়েছে সেই পরিমান ফার্মাসীষ্ট পাশ করে বের হচ্ছে না।তাই এখানে ডিপ্লোমা ফার্মাসীষ্টদের পর্যাপ্ত ঘাটতি রয়েছে।অধিকাংশ ক্ষেত্রে অদক্ষ ফার্মাসীষ্ট টেকনিশিয়ান দিয়ে এই ঘাটতি পূরন করা হচ্ছে যাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোন ডিগ্রি নেই।যা চিকিৎসা ক্ষেত্রে মারাত্বক হুমকি স্বরুপ।এই অভাব পূরন করার লক্ষে এবং চিকিৎসা সেবাকে নির্ভুল ভাবে পরিচালিত করার জন্য একজন ফার্মেসী টেকনোলজিষ্ট এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।একজন দক্ষ ফার্মেসী টেকনোলজিষ্ট নির্ভূল ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে জীবনের ঝুকি কমিয়ে চিকিৎসার মান উন্নয়ন, সময় ও ব্যায় উভয় লাঘব করতে পারে।
ডিগ্রির কর্মক্ষেত্র:
সফলভাবে ফার্মেসী টেকনোলজি কোর্স সম্পন্নকারীদের স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন বিভাগে কর্ম ক্ষেএের প্রচুর সুযোগ রয়েছে।ফার্মেসী টেকনোলজি কোর্স সম্পন্ন করার পর একজন টেকনোলজিষ্ট বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি, ক্লিনিক, হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ,বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও ঔষধ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ হিসেবে বিভিন্ন পদে যোগদান করতে পারেন।
সরকারী পর্যা্য়ে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ যেমন-
- জেলা সদর হাসপাতাল
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- সরকারি ঔষধ কোম্পানি।
- বিভিন্ন সরকারি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে
যেমন- মেডিকেল কলেজ, ম্যাটস ইনষ্টিটিউট, নার্সিং ইনষ্টিটিউট ও কলেজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, বিভিন্ন সরকারি প্রশিক্ষন কেন্দ্র ইত্যাদি।
বেসরকারী পর্যায় কর্মেক্ষেত্রের সুযোগ যেমন–
- বেসরকারি হাসপাতাল
- বেসরকারি ক্লিনিক
- বিভিন্ন এনজিও
- বেসরকারি ঔষধ কম্পানি।
- বিভিন্ন বেসরকারি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে
যেমন- মেডিকেল কলেজ, ম্যাটস ইনষ্টিটিউট, নার্সিং ইনষ্টিটিউট ও কলেজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, বিভিন্ন বেসরকারি প্রশিক্ষন কেন্দ্র ইত্যাদি।
- এছাড়াও নিজস্বফার্মেসী প্রতিষ্ঠা করে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং কর্ম-সংস্থান সৃষ্টি করা যায়।
- বর্হিবিশ্বে বিভিন্ন দেশে ভাল বেতনে কর্ম সংস্থান এবং উচ্চতর ডিগ্রির সুযোগ আছে ।
ভর্তির যোগ্যতা:
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড:প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ৮ বছর আগে যে কোন বিভাগ ও বোর্ড থেকে এস.এস.সি/দাখিল/ভোকেশনাল/ উন্মুক্তসহ সম-মানের পরীক্ষায় নূন্যতম জি.পি.এ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
কোর্স স্ট্রাকচার:
- তিনবছর একাডেমিক কোর্স (৬ সেমিষ্টার।
- একবছর ইন্টার্নশীপ কোর্স (২ সেমিষ্টার)
কোর্স কারিকুলাম:
ফার্মেসী টেকনোলজি কোর্সের শিক্ষার্থীরা মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের গঠন ও কাজ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা পায়। ক্ষুদ্র অনুজীব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে।যেমন Bacteria,Virus, Fungus, Protozoa,Parasites ইত্যাদি জীবানুর আকার,আকৃতি, গঠন,রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা,কি কি রোগ সৃষ্টি করতে পারে, কিভাবে রোগ সৃষ্টি করে এবং কিভাবে অনুজীবকে ধ্বংস করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করে।বিভিন্ন ধরনের ড্রাগ ও মেডিসিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।বিশেষ করে ড্রাগের উৎস,কি কি উপাদান দিয়ে ড্রাগ প্রস্তুত করা হয় এবং কিভাবে প্রস্তুত করা হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।যে সকল মাধ্যমে ঔষধ গ্রহন করা হয় এবং যে প্রক্রিয়ায় ঔষধ মানবদেহে কাজ করে থাকে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।এছাড়াও ঔষধের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা যায়।শিশু থেকে বৃদ্ধ মানুষের কি কি রোগ হতে পারে সেই লক্ষন অনুযায়ী রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।চিকিৎসা বিষয়ক আইন-কানুন সম্পর্কেও ধারনা দেয়া হয়। চিকিৎসাবিদ্যার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে কথা বলা, লেখা ও উচ্চারণের প্রশিক্ষন দেয়া হয়। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়।
Discussion about this post