মেডিকেল এ্যাসিষ্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল বা ম্যাটস্ কি?
Medical Assistant Training School (MATS) হল এক
ধরনের
বিশেষায়িত মেডিক্যাল ডিপ্লোমা স্কুল।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও
পরিবার
কল্যাণ
মন্ত্রণালয় এ
ধরনের
স্কুল
প্রতিষ্ঠার অনুমতি
প্রদান
করে।
অনুমোদনের পরে
সব
ম্যাটস্ বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ
(State Medical Faculty) এর
মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
অনুষদের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পাঠদান
করা
হয়
এবং
অনুষদের সরাসরি
তত্বাবধানে পরীক্ষা গ্রহণ
করা
হয়।
ডিপ্লোমা ইন মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টি Diploma of Medical Faculty (DMF) কি?
Diploma of Medical Faculty (DMF) ম্যাটস্ প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত একটি
কোর্সের নাম।
এই
কোর্সের মেয়াদ
বর্তমানে ৪
বছর।
সরকার
অনুমোদিত যেকোনো
ম্যাটস্ পাঠ্যক্রম সম্পন্ন করে
যারা
উত্তীর্ণ হন
তাদেরকে Diploma of Medical Faculty (DMF) ডিগ্রি দেয়া হয়।
ডিগ্রি
গ্রহণ
করে
এসব
চিকিৎসক-গন
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক
রেজিস্ট্রেশন/লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়ে
চাকুরী
বা
প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাকটিস কাজ
করতে
পারেন।
পটভূমি:
আমাদের
দেশে
এমবিবিএস ডাক্তারের সংখ্যা
এখনও
যথেষ্ট
নয়।
তার
পরেও
যারা
এমবিবিএস পাশ
করেন,
তারা
মফস্বলে গিয়ে
থাকতে
চান
না।
সরকার
পদায়নে
বাধ্য
করলেও
তারা
বদলি
নিয়ে
ঢাকায়
চলে
আসেন,
বা
ডিউটি
করেন
না
(এমনকি
অনেকে
চাকরি
ছেড়ে
দিয়ে
শহরের
প্রাইভেট হসপিটালে যোগদান
করেন)। তাই
দেশর
বৃহত্তম জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্য নামের
মৌলিক
অধিকার
বঞ্চিত
ন
হয়।
সেই
অভাব
পূরণ
করতে
দেশের
প্রান্তিক জনগণের
স্বাস্থ্য ও
পরিবার
পরিকল্পনা সেবা
দ্রুত
পৌঁছে
দেবার
উদ্দেশ্যে ১৯৭৬
সালে
ম্যাটস্ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ
নেয়া
হয়।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ
(State Medical Faculty) এর
আওতায়
প্রথমে
সরকারি
উদ্যোগে ম্যাটস্ স্থাপিত হয়।
এর
পরে
ক্রমশ
বেসরকারি উদ্যোগে এ
ধরনের
প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক
সম্প্রসারণ হয়।
শুরুতে
এই
কোর্সটির মেয়াদ
ছিল
৩
বছর।
বর্তমানে এই
কোর্সটি আরও
আধুনিক
করা
হয়েছে
এবং
৪
বছর
মেয়াদে
উন্নীত
করা
হয়েছে।
ম্যাটস্ প্রতিষ্ঠান থেকে DMF ডিগ্রি নিয়ে ১৯৭৯ সালে থেকে গ্রাম/ইউনিয়ন এবং উপজেলা-পর্যায়ে নিযুক্ত হয়ে মেডিকেল এ্যাসিষ্ট্যান্টগন চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন।
MATS/DMF পেশাজীবীদের
সম্ভাবনা:
দেশে
বর্তমান প্রায়
৫
হাজার
সরকারী
নিয়োগ
প্রাপ্ত মেডিকেল এ্যাসিষ্ট্যান্ট DMF ডাক্তার আছে।
সরকারী
প্রতিষ্ঠান থেকে
প্রতিবছর ৩০০-৪০০জন পাশ করে
বের
হয়।
অথচ
DMF ডাক্তারের প্রয়োজন রয়েছে
প্রায়
১০
হাজার।
২০০৮
সালের
সরকার
বিজ্ঞাপন দিয়েও
চাহিদা
অনুযায়ী DMF ডাক্তার পাওয়া
যায়নি।
শুধুমাত্র সরকারী
ভাবে
চাকুরীর পোষ্ট
খালি
রয়েছে
৯
হাজার
এর
উপরে।
DMF ডিগ্রিধারীরা সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং
পরিবার
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় অধীনে
উপজেলা
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও
পরিবার
কল্যাণ
কেন্দ্রে, স্কুল
হেলথ
ক্লিনিক, বিভিন্ন আধাসরকারী/কর্পোরেশন- যেমন-
তিতাস
গ্যাস,
বি,আই,ডব্লিউ, টি,সি, বিজি প্রেস,
বাংলাদেশে বিমান
ইত্যাদি ছাড়াও
বিভিন্ন এনজিও
প্রতিষ্ঠানে যেমন-ব্র্যাক, গণস্বাস্থ্য, কেয়ার, গণসাহায্যে সংস্থা,
আই
সি
ডিডিআরবি, Save the Children (USA)/(UK), ইহা ছাড়াও দেশী
বিদেশী
নানা
প্রতিষ্ঠানে DMF ডিগ্রি
প্রাপ্তগন নিয়োগ
পেয়ে
থাকে।
ভবিষ্যতে আরও
নতুন
কর্মক্ষেত্র তৈরি
হবে।
কিন্তু
প্রশ্ন
হল
বর্তমানে শুধু
সরকারী
পর্যায়ে নিয়োগ
দেওয়ার
জন্য
যথেষ্ট
সংখ্যক
DMF ডিগ্রিধারী না
থাকায়
বার
বার
নিয়োগ
বিজ্ঞপ্তি দিয়েও
আসন
খালি
থেকে
যাচ্ছে। এই
সমস্যা
সমাধানের জন্যই
সরকার
বেশী
সংখ্যক
DMF ধারী
ডাক্তার তৈরির
জন্য
বেসরকারি পর্যায়ে শিক্ষা
দেওয়ার
ব্যবস্থা শুরু
করেছে।
বলতে
গেলে
বর্তমানে এবং
সামনে
আরও
৭/৮ বৎসর একহাতে
DMF সার্টিফিকেট এবং
অন্য
হাতে
চাকুরীর সুযোগ
রয়েছে।
আবার
চাকুরী
না
করলেও
একজন
DMF ডাক্তার প্রাইভেট প্রাকটিশনার হিসাবে
শহরে
বন্দরে
কিংবা
গ্রামে
ডাক্তারি করে
মাসে
ভালো
পরিমাণ
অর্থ
রোজগার
করতে
পারবে
যাহা
একটা
ভালো
চাকুরীর চেয়ে
কোন
অংশে
কম
নয়।সরকারী চাকুরীতে DMF -দের
Sub-Assistant Community Medical officer বা উপ-সহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা অথবা
Medical Assistant হিসাবে
এবং
বেসরকারি ক্ষেত্রে নানাবিধ পদে
চাকুরীতে নিয়োগ
দেওয়া
হয়।
এক
কথায়
কোর্স
সম্পন্ন করলে
১০০%
নিশ্চিত চাকুরী
অথবা
আত্ম
কর্মসংস্থানের সুযোগ
রয়েছে।
কাজের সুযোগ:
সফলভাবে ম্যাটস কোর্স সম্পন্নকারীদের জন্য কর্ম ক্ষেত্রের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। ম্যাটস কোর্স সম্পন্ন করার পর একজন ব্যক্তি সরকারী হাসপাতাল/বেসরকারি হাসপাতাল/কমিউনিটি হাসপাতালে দ্বিতীয় শ্রেণীর বিভিন্ন পদে যোগদান করতে পারেন।
সরকারী পর্যায়ে যেমন-
- জেলা সদর হাসপাতাল
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- কমিউনিটি ক্লিনিক
- বিভিন্ন সরকারি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। যেমন- মেডিকেল কলেজ, ম্যাটস ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইন্সটিটিউট ও কলেজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, বিভিন্ন সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি।
বেসরকারি পর্যায়ে যেমন-
- বেসরকারি হাসপাতাল
- বেসরকারি ক্লিনিক
- বিভিন্ন এনজিও
- ডায়াগনস্টিক সেন্টার
- বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি
- বিভিন্ন বেসরকারি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। যেমন- মেডিকেল কলেজ, ম্যাটস ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইন্সটিটিউট ও কলেজ,বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ,বিভিন্ন বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি।
এছাড়াও নিজস্ব চেম্বার এর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যায়।
ভর্তির যোগ্যতা:
প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ৪
বছর
আগে
বিজ্ঞান বিভাগ
থেকে
এস.এস.সি/দাখিল/
উন্মুক্ত (জীব
বিজ্ঞানসহ) সম-মানের পরীক্ষায় নূন্যতম জি.পি.এ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে
হবে।
কোর্স স্ট্রাকচার:
– তিন
বছর
একাডেমিক কোর্স
(১ম,
২য়
ও
৩য়
বর্ষ)
।
– এক
বছর
ইন্টার্নশিপ কোর্স
( ৯
মাস
জেলা
সদর
হাসপাতাল ও
৩
মাস
উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স )।
কোর্স কারিকুলাম :
ম্যাটস
কোর্সের শিক্ষার্থীরা মানবদেহের অঙ্গ
প্রত্যঙ্গের অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট
ধারনা
পায়।
তারা
সমাজের
মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সব
ধরনের
জ্ঞান
লাভ
করে।
এছাড়া
কিভাবে
তা
রোগ
প্রতিরোধ ও
পুনর্বাসন করতে
হয়
সে
সম্পর্কে প্রশিক্ষিত হয়ে
গড়ে
ওঠে
। বিভিন্ন ধরনের
ড্রাগ
এবং
মেডিসিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করা
হয়
। বিভিন্ন ধরনের
পরীক্ষা যেমন
রক্ত
পরীক্ষা, প্রসাব
পরীক্ষা, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা
দেয়া
হয়
। শিশু
থেকে
শুরু
করে
বয়স্ক
মানুষের কী
কী
রোগ
হতে
পারে
এবং
লক্ষণ
প্রকাশ
ও
তা
অনুযায়ী রোগের
চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ ও
দেয়া
হয়
।এমন কি বিভিন্ন অপারেশনে পারদর্শী করে
তোলা
হয়
। মহিলাদের বাচ্চা
প্রসব
করা,
নবজাতকের পরিচর্যা, মা
ও
শিশুর
স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারনা
দেওয়া
হয়।
এছাড়া
চিকিৎসা বিষয়ক
আইনগুলো সম্পর্কে ধারনা
দেয়া
হয়।
চিকিৎসাবিদ্যার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে কথা বলা, লেখা ও উচ্চারণের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়।
Discussion about this post