জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহুল আলোচিত বিষয় বিশ্বায়ন। যার অর্থ বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও পরিবেশের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রয়োগের সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেকনোলজিটি হল কম্পিউটার টেকনোলজি। কম্পিউটার টেকনোলজি আমাদের ইন্টারনেটের ব্যবহার নিশ্চিত করে যার মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে দৈনন্দিন জীবনের যে কোন জটিল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। ই-কমার্স, ই-বিজনেস, ই-ব্যাংকিং, ই-পুলিশ ব্যবস্থা সম্ভব শুধুমাত্র কম্পিউটার টেকনোলজি উন্নয়নের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কর্মক্ষেত্রে এই কোর্সটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সাসেগ-গুরুকুল শিক্ষা পরিবারের বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় গুরুকুলে এই কোর্সটি যৌথভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
কোর্সের উদ্দেশ্য :
বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহারের সূচনা হয় ষাটের দশকে এবং নববই -এর দশকে তা ব্যাপকতা লাভ করে।বাংলাদেশে সর্ব প্রথম কম্পিউটার আসে ১৯৬৪ সালে।এর পর থেকেই আশিরদশকের মধ্যভাগ থেকে এ দেশে তথ্য প্রযুক্তি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করতে শুরু করে। পাকিস্তান পরমাণু শক্তি কমিশনের পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা-তে ১৯৬৪ সালে স্থাপিত হয় বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থান) প্রথম কম্পিউটার। এটি ছিল আইবিএম কোম্পানির ১৬২০ সিরিজের একটি মেইনফ্রেম কম্পিউটার ।যন্ত্রটির প্রধান ব্যবহার ছিল জটিল গবেষণা কাজে গাণিতিক হিসাব সম্পন্ন করণ।এর পর খেকেই বাংলাদেশ সরকার একটি উদ্দেগ গ্রহণ করেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার শপ্ন।বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোর সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দেন এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ষোলগান দেন যে কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করি শক্ত হাতে দেশ গড়ি।বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট হিসাব করলে দেখা যায় ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি যেটি আমরা বর্তমান প্রকাশিত চাকুরীর বিভিন্ন সার্কুলার গুলো লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই।
কর্মক্ষেত্র: একমাত্র কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংগণের সকল ক্ষেত্রে পেশার সুযোগ রয়েছে। সেগুলো হলো :-ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশেন টেকনোলজি, ব্যাংক, বীমা, সরকারী মেইনটেন্যান্স, পাওয়ার প্লান্ট, পিডিবি,পল্লী বিদ্যুৎ, ডেসকো, ওয়াসা, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রিনিক্স পন্য সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ , সরকারী ও বেসরকারী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সমূহ সিটি কর্পোরেশন,পৌরসভা , ভোকেশনাল স্কুল , টিটিসি, টিএসসি, সৌর বিদ্যুৎ ,পরমানু গবেষনা কেন্দ্র, বাণিজ্যিক ব্যাংক, শিল্প-কারখানা, গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রি ইত্যাদি সহ আরো অনেক সরকারী/ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চাকুরীর সুবিধা রয়েছে।
ভর্তির যোগ্যতা :
কম্পউটার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে হলে উক্ত শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে এস,এস,সি পাশ হতে হবে। প্রাখীর্কে সর্বোচ্চ ৮ বছর আগে এস.এস.সি/দাখিল/ভোকেশনাল সমমানের পরীক্ষায় যে কোন বিভাগ হতে নূন্যতম জি.পি.এ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
বর্তমানে কোর্স স্ট্রাকচার
-তিন বছর ৬ মাস একাডেমিক কোর্স (৬ মাস মেয়াদী ৮টি সেমিস্টার)।
-বাকী ৬ মাস একাডেমিক কোর্স (ট্রেড সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে)।
অর্থাৎ ৪ বছরে মোট ৮টি সেমিস্টার পড়ানো হয়। টোটাল ক্রেডিট ১০১।
টোটাল সাবজেক্ট=৫০টি
টোটাল মার্ক=৭৮৫০
কোর্স কারিকুলাম :
ডিপ্রোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের শিক্ষার্থীরা দৈনিন্দিন জীবনে কম্পিউটারের নানামূখী ব্যাবহার ও ছোট্র ছোট্র প্রোগ্রাম তৈরী,রোবট তৈরী ও নানামূখী আবিস্কার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা পায়।এছাড়া কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরী করার ক্ষেত্রে ,কম্পিউটার মেরামত ও কম্পিউটার টাবল শোটিং এর কাজ ও ডাটাবেজ প্রোগ্রাম তৈরী করার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। এছাড়া বাংলাদেশের কম্পিউটারের বিভিন্ন আবিস্কার সম্পর্কে ধারনা দেয়া হয়। তাত্বিক ক্লাসের পাশাপাশি শিক্ষাথীর্দের নিয়মিত ব্যবহারিক ক্লাস গ্রহণ করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা কর্মমূখী জ্ঞানলাভ ও দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রশিক্ষন দেয়া হয় যাতে বর্তমানে পেক্ষাপটের সাথে তাল মিলিয়ে তা নিজিকে প্রতিষ্টিত করতে পারে।
উচ্চ শিক্ষার সুযোগ:-
ডিপ্রোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সটি সম্পন্ন করার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য রয়েছে বাংলাদেশের স্বনামধন্য সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি(ডুয়েট)। এছাড়াও রয়েছে ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের(আইইবি)এবং বেসরকারী ইউনিভারসিটি থেকে মাত্র ৩ ও ৪ বৎসরে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুয়োগ রয়েছে।
Discussion about this post