সৌরজগতের কেন্দ্রের খুব কাছে অবস্থিত একটি তারা হলো সূর্য। প্রায় পুরো গোল এ তারা প্রধানত প্লাজমা ও আয়নিত পদার্থ দিয়ে তৈরি। সূর্য পৃষ্ঠে তাপমাত্রা হলো প্রায় ১০ হাজার তিনশ চল্লিশ ড্রিগ্রি ফারেনহাইট বা ৫ হাজার সাতশ ছাব্বিশ ড্রিগ্রি সেলসিয়াস।
সূর্যের প্রধান গাঠনিক উপাদান হাইড্রোজেন। আসলে সূর্যের মোট ভরের তিন চতুর্থাংশই হাইড্রোজেন। হাইড্রোজেনের পর সবচেয়ে বেশি আছে হিলিয়াম। এছাড়া অন্যান্য ভারি মৌলগুলোর মধ্যে রয়েছে অক্সিজেন, কার্বন, নিয়ন ও লোহা ইত্যাদি।
আমরা জানি যে সূর্য ক্রমাগত পুড়েই যাচ্ছে। সূর্য নিউক্লিয় ফিউশন প্রক্রিয়ায় আবিরাম হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়ামে পরিণত করে।
পৃথিবীতে পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন পাথর ও উল্কাপিণ্ডের বয়স হচ্ছে ৪৬০ কোটি বছর। ধারণা করা হয় পুরো সৌরজগতের সৃষ্টি একই সময়ে। সেক্ষেত্রে সূর্যেরও বয়স হয় একই। তাহলে ৪৬০ কোটি বছর ধরে সূর্য হাইড্রোজেন পুড়িয়ে যাচ্ছে।
সূর্য প্রতি সেকেন্ডে ৬২ কোটি মেট্রিক টন হাইড্রোজেন পোড়ায়। সূর্যের জন্মের পর থেকে গত ৪.৬ বিলিয়ন বছর ধরে সে তার প্রায় অর্ধেক হাইড্রোজেন গ্যাস খরচ করে ফেলেছে।
যদি হাইড্রোজেন শেষ হয়ে যায় তাহলে? গড় দূরত্বে সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে আসতে ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময় নেয়। এ সূর্যালোকের শক্তি পৃথিবীর প্রায় সব জীবকে বাঁচিয়ে রাখে। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় এ আলো থেকেই খাদ্য উৎপাদন করে। প্রাণীরা খাদ্যের জন্য এসব উদ্ভিদ বা অন্য প্রাণীর উপর নির্ভর করে। এখন সূর্য যদি পুড়ে শেষ হয়ে যায় তাহলে পৃথিবীও কি শেষ হয়ে যাবে?
আশার কথা হচ্ছে আপাতত তা হচ্ছে না। আরও ৫ বিলিয়ন বছর ধরে পুড়ার জন্য সূর্যের মধ্যে এখনও যথেষ্ট হাইড্রোজেন গ্যাস মজুদ রয়েছে।যখন হাইড্রোজেন শেষ হয়ে যাবে তখনও এটি হিলিয়াম ও অন্যান্য ভারি উপাদানগুলোকে জ্বালিয়ে আলো দিতে পারবে।
Discussion about this post