শিক্ষার আলো ডেস্ক
রং আর তুলির ছোঁয়ার মিশ্রণকে একসাথে করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এঁকে সেরা আঁকিয়ের পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ‘একশ’ জন ক্ষুদে চিত্রশিল্পী।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মিলনায়তনে সেই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
শূন্য থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চার ধাপে একশ’ শিশুদের মাঝে ‘ক’ শাখার জন্য একটি করে কমিক বুক, গ্লোব, বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ক্রিস্টাল, তিন প্যাকেট রং, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী মেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেট, টবসহ গাছ ও প্রথম স্থান অর্জন কারীদের জন্য বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ শাখার শিশুদের প্রতিটি প্যাকেটে যুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, একাত্তরের সহযোদ্ধা, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়া চীন এবং শত বর্ষে বঙ্গবন্ধু’র বই।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আজ এই শিশুরা ছবি এঁকেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান শিশুদের ভালোবাসতেন। আজকের শিশুরা বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করেই আগামীতে নেতৃত্ব দেবে দেশকে। এটাই আমি আশা করি।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘সমাজ থেকে সাংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। এই বাংলায় হাজার বছরের সংস্কৃতি ছিল ভাটিয়ালী, জারি-সারি ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। যাত্রাপালা হারিয়ে গেছে, নাটকও হারানোর পথে। সঙ্গীত চর্চা এটাও আবার ধর্মে কোনো ক্ষতি হয় কি না এই চিন্তায় পড়ে অনেক বাবা-মা নিরুৎসাহিত করেন।’
তিনি বলেন, ‘লেখা-পড়ার পাশাপাশি মানুষের মনের চিত্তবিনোদনের জায়গাটাও খোলা রাখতে হবে। আজকে আমাদের দেশ থেকে লোক সাহিত্য হারিয়ে যাওয়ার কারণে ধর্মের নামে অধর্ম জেঁকে বসেছে। গ্রাম-গঞ্জে নাটক যাত্রার বদলে ওয়াজ মাহফিল হয়। এই ওয়াজ মাহফিলের নামে এমনসব কথাবার্তা হয় যেটা রীতিমত ইসলাম ধর্মের বিশ্বাসীদের শঙ্কিত করে তোলে। এ ধরনের মিথ্যাচার, অযৌক্তিক ও হাস্যকর কথা বলার কারণে অন্য ধর্মের মানুষের কাছে আমরা হাসির পাত্র হয়ে পড়ছি। আজকের শিশুদের চিত্রকর্মের পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও আসন্ন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জাতীয় সঙ্গীত ধারণ করার কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা বলেন, ‘রং তুলির আঁচড়ে যে ছোট্ট শিল্পীরা নানা আঙ্গিকে চিত্রায়িত করেছেন আমাদের জাতির পিতাকে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমাদের জাতির পিতা শিল্প কাব্য গানে চিত্রকলায় চিত্রিত হয়ে এভাবেই বেঁচে থাকবেন প্রতিটি বাঙালির অন্তরে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দের প্রতি শেখ হাসিনার আহ্বানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার মাধ্যমে সুন্দর আগামী গড়তে সবাইকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সচেতনতা, পরিশেষ দুষণ রোধ এবং বৃক্ষরোপন কর্মসূচি জোরদার করার নাগরিক দায়িত্ব।’
বন ও পরিবেশ উপ-কমিটি চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক উপ উপাচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ বক্তব্য রাখেন। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন।
এসময় অতিথিদের একটি ব্যাগে শত বর্ষে বঙ্গবন্ধু বই, শেখ কামাল মুক্তপ্রাণের প্রতিনিধি, বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ক্রিস্টাল, বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ও টবসহ গাছ উপহার তুলে দেন দেলোয়ার হোসেন।
Discussion about this post