খেলাধূলা ডেস্ক
গতকাল সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মাশরাফির ব্রেসলেট। করোনা যুদ্ধে নিজের ১৮ বছরের সঙ্গী ব্রেসলেট নিলামে তুলেছেন বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়ক। ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে এ ব্রেসলেট। করোনা যুদ্ধে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের নিলামে তোলা সরঞ্জামের মধ্যে মাশরাফির ব্রেসলেটই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হলো। এটি কিনেছে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান—বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্স কোম্পানি।
অবশ্য ক্রেতারা এটি মাশরাফিকে উপহার হিসেবে ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে মুমিনুল ইসলাম মাশরাফির উদ্দেশে বলেছেন, ‘অ্যাসোসিয়েশনের সবাই একবাক্যে রাজি হয়ে গেছে। একটা ভালো কাজে যদি ব্যয় হয় এবং বাংলাদেশের অধিনায়ককে যদি সম্মান জানানো যায়, এর চেয়ে ভালো কিছু আর হয় না। আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাকে বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটা উপহার দেবো।’
বাংলাদেশে লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাশরাফি বলেছেন, ‘ধন্যবাদ মুমিন ভাই, আপনি অনেক কিছু করেছেন। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে এটা দিতে আমার বিন্দুমাত্র খারাপ লাগবে না। আপনারা যেহেতু আমাকে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটা উপহার দিচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত আমি এটা খুলে রাখবো।’
স্বাভাবিকভাবেই ফেসবুকে নিলামের লাইভ অনুষ্ঠানে মাশরাফির এই ব্রেসলেটের পেছনের ইতিহাস জানতে প্রচুর প্রশ্ন করছিলেন ভক্তরা। সঞ্চালক তা জানানোর পর নিজের ব্রেসলেটপ্রীতির কথা খুলে বলেন মাশরাফি, ‘দুটো জিনিসের ওপর আমার ছোটবেলা থেকে অনেক শখ ছিল। কিন্তু বাসার ভয়ে বিশেষ করে বাবার ভয়ে কখনো ব্যবহার করতে পারতাম না। সেগুলো হচ্ছে ব্রেসলেট ও সানগ্লাস (রোদ চশমা)। যখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা শুরু করলাম তখন ভাবলাম ঠিক আছে এখন ব্যবহার করি। আমি নিশ্চিত বাবা এখন কিছু বলবে না।’
এরপর মাশরাফি নিলামে ওঠা তাঁর হাতের ব্রেসলেটটি দেখিয়ে বলেন, ‘তো এটা সবাই যা ভাবছে তা নয়। খুব সাধারণ। অনেকে ভেবেছিল রুপার, তাও না। এটা সাধারণ স্টেইনলেস স্টিলে তৈরি (ব্রেসলেট)। আমার বন্ধুর মামা ওখান থেকে বানিয়ে দিয়েছিল। এরপর থেকেই এটা পরে থাকি। কয়েকবার হাত থেকে খুলে রেখেছি। মনে করে দেখবেন, আমাদের একটা ব্রেসলেট ধরনের প্লাস্টিকের ছিল, বাংলাদেশের লাল-সবুজ নিয়ে। বাংলাদেশের জার্সির মতো। বগুড়ায় খেলেছি, কয়েকবার পরেছি। কিন্তু এটা (হাতের ব্রেসলেট দেখিয়ে) ছাড়া ভালো লাগেনি।তারপর থেকেই এটা আমার সঙ্গী। ভালো-মন্দ সবকিছুর সঙ্গেই এটা জড়িয়ে আছে। একটা পর্যায়ে গিয়ে এটা ছাড়া কখনো আর কিছু পরিনি। সেটা বলতে পারেন, অস্ত্রোপচারে (ধাতব কোনোকিছু খুলে রাখতে হয়) এমআরআইয়ে খুলতে হয়েছে। আর ওই দুটো জায়গাতেই আমাকে বেশি যেতে হয়েছে (হেসে)। সব মিলিয়ে এটা (ব্রেসলেট) সব সময়ই আমার সঙ্গে ছিল।’
Discussion about this post