ক্রীড়া ডেস্ক
তিনি জাত ব্যাটসম্যান। টেস্ট (৫৩.৬২ গড়ে ৮৬ টেস্টে ২৭ সেঞ্চুুরি, ২২ হাফসেঞ্চুুরিতে ৭২৪০ রান), ওয়ানডে (২৪৮ ম্যাচে ৪৩ সেঞ্চুরি ও ৫৮ হাফসেঞ্চুরিতে ১১৮৬৭ রান, ৫৯.৩৩ গড়), টি-টোয়েন্টি (৫০.৮০ গড়ে ১৩৮.২৪ স্ট্রাইকেরেটে ৮২ ম্যাচে ২৭৯৪ রান) তিন ফরম্যাটেরই রান মেশিন। এখন বিশ্ব তারকা। অতি বড় সমালোচকও মানছেন, তিন ফরম্যাটেই যে কোন বিচারে এক নম্বর ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। তারকা খ্যাতি আর জনপ্রিয়তার মানদণ্ডেও কোহলি সবার ওপরে।
জানেন কি, ভারত অধিনায়ক যে স্লেজিংয়েও সবার ওপরে? বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীমের ভাষায়, বিরাট কোহলি শুধু দলের দায়িত্ব পালনের অধিনায়ক নন, স্লেজিংয়েও তিনি সবার ক্যাপ্টেন।
কাল রোববার (১৭মে) রাতে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের সাথে এক ইউটিউব লাইভে অনেক কথার ভীড়ে স্লেজিং প্রসঙ্গ উঠেছিল। সেখানে কথা প্রসঙ্গে মুশফিকুর রহীম বলেছেন, নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা হলে সবচেয়ে বেশি স্লেজিং করেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। আর সেই স্লেজিং মিশনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি!
প্রশ্ন ছিল, কোন দেশ বা কোন দেশের ক্রিকেটাররা বেশি স্লেজিং করেন? মুশফিক মুহূর্তের মধ্যে বলে দেন, ‘অস্ট্র্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ানরাই স্লেজিংয়ে পাকা। করেও বেশি।’
তবে তিনি জানান, নিকট অতীত বা সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয়রাও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সাথে প্রচুর স্লেজিং করেন। মুশফিকের ধারণা, সেটা হয়েছে মূলত ভারতের সাথে গত কয়েক বছরে বাংলদেশের ভালো পারফরমেন্স এবং বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের বড় আসরে হারের পর থেকে।
স্লেজিং নিয়ে কথা বলতে বলা হলে টাইগার দলের উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ানদের মত করে কেউ স্লেজ করতে পারে না। অজিদের সাথে বহুবার স্লেজিংয়ের শিকার হয়েছি।’
মুশফিক যোগ করেন, ‘তবে সাম্প্রতিক সময় বিশেষ করে শেষ ৫ বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে ভারতের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়েছে অনেক। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। বাংলাদেশ আর আগের মত নেই। ভালো খেলার কারণে প্রত্যাশাও বেড়েছে । এখন একটা আশা থাকে যে, বাংলাদেশ ভালো খেললে যে কারো সাথেই হোক সমানতালে লড়াই করতে পারে। এমনকি হারিয়েও দিতে পারে। ঐ দিক থেকে ভারতের সাথেও তেমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। শুধু আমি না অনেক সবাইকে বিশেষ করে যারা টপ অর্ডারে ব্যাটিং করে তাদের সবাইকে ভারতীয়রা বেশি স্লেজিং করে। আর এই কাজে ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি রাখেন অগ্রণী ভূমিকা। শুধু আমাকে নয়, সবাইকেই উনি স্লেজ করে থাকেন।’
‘আমরা হয়তো ভারতের সাথে নিয়মিত জিতি না, তবে আমাদের এমন এমন জয় আছে, যা ভারতীয়দের এখনো পোড়ায়। কিছু কিছু জায়গা আছে, যেখানে বাংলাদেশের সাথে হেরেছে ভারত। কিছু কিছু জায়গা আছে, যেখানে ভারতীয়রাই বাংলাদেশের বিপক্ষে বেশি স্লেজিং করে থাকে’-মুশফিকের উপলব্ধি।
নোমান মোহাম্মদের প্রশ্ন, ‘তাহলে কি ভারতের স্লেজিংয়ের ক্যাপ্টেনও বিরাট কোহলি?’ মুশফিক হেসে জবাব দেন, ‘হতে পারে। বিরাট কোহলি স্লেজিংয়ে খুব পাকা এবং করেনও বেশি।’
এটুকু বলেই থামেননি মুশফিক। তার ব্যাখ্যা ভিন্ন। তার অনুভব, প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটারদের মনোযোগ-মনোসংযোগে চিড় ধরাতে স্লেজিং এক কার্যকর দাওয়াই। তবে সেটা করার জন্যও কারিশমা লাগে। শক্ত ব্যক্তিত্ব প্রয়োজন। সবার পক্ষে তা করা সম্ভবও না। আর তাই তার মনে হয় বিরাট কোহলি সে কাজে পারফেক্ট ফিগার। তার ওমন বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব আছে।
মুশফিকের ভাষায়, ‘আসলে স্লেজিং করতেও সাহস ও শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব লাগে। বিরাট এত বড় প্লেয়ার, স্লেজিং করা তাকেই মানায়। এটা স্বাভাবিক, যার সব ফরম্যাটে গড় ৫০ এর বেশি, তার মুখেই আসলে স্লেজিং শোভা পায়।’
Discussion about this post