ক্রীড়া ডেস্ক
তার নামের পাশে ডজন ডজন সেঞ্চুরি আর হাজার হাজার রান। সন্দেহাতীতভাবেই তিনি সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান। মাঠে নামলেই তার ব্যাট কথা বলে, স্বচ্ছন্দে খেলেন। যার তার বিপক্ষে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে রানের ফলগুধারা বইয়ে দেন বিরাট কোহলি।
এসব দেখে অনেকেরই ধারণা, বিরাট বোধহয় ঘন্টার পর ঘন্টা অনুশীলন করেন, দৈনিক নেটে শয়ে শয়ে বল খেলে নিজেকে ম্যাচের জন্য তৈরি করেন। তা না করলে ম্যাচে এত ভাল খেলেন কী করে? এমন চিন্তার মানুষই বেশি।
আসলে কি তাই? এ মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি নেটে কতক্ষণ সময় কাটান? তার প্র্যাকটিসের ধরনই বা কেমন? তিনি কি নেটে ঘন্টার পর ঘন্টা নিবিড় প্র্যাকটিস করেন? ভক্ত, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের কৌতূহলি প্রশ্ন।
সোমবার (১৮মে) রাতে নিজের ফেসবুক লাইভে তামিম ইকবাল সে প্রশ্নটাই রাখলেন বিরাট কোহলির কাছে, ‘আচ্ছা বিরাট ভাই, আপনি কি অনেকক্ষণ ধরে প্র্যাকটিস করেন? নেটে কি শয়ে শয়ে বল খেলেন। আপনার প্র্যাকটিসের ধরন কেমন? একটু বলবেন কি?’
উত্তর দিতে গিয়ে বিরাট কোহলি অনেক কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হলো, তার প্র্যাকটিসের সুনির্দিষ্ট কোন ধরন নেই। কখনও অল্প সময়, আবার কখনও একটা লম্বা প্র্যাকটিস সেশন কাটান। তার অনুভব, প্র্যাকটিস একজন ক্রিকেটারকে আশ্বস্ত করে, বলে দেয় আপনি তৈরি। তবে আত্মবিশ্বাসটা আসে ম্যাচ থেকে। মাঠে ভাল করলেই আসল আত্মবিশ্বাস চলে আসে এবং সেটা পারফরমেন্স করেই আসে।
তার ব্যাখ্যা, ‘আমার আসলে প্র্যাকটিসের নির্দিষ্ট কোন ধরন নেই। এমন নয় একভাবেই অনুশীলন করি। এটা নির্ভর করে পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর। কখনও নেটে ৭-৮ মিনিট ব্যাটিং করি। আর সাইড আর্ম বল থ্রো’তে ১০ মিনিট। তবে ঐ সময়টায় আমি খুব একাগ্রচিত্তে অনুশীলন করি। আমার মনে হয় দীর্ঘ সময়ের চেয়ে একাগ্রতাটাই বড়। সব সময় ইনটেন্স থাকার দরকার নেই। কখনও কখনও একটু কফি খেতেও যাওয়া উচিৎ।’
‘তবে আমি ফিটনেস ও ডায়েটের ব্যাপারে খুব সতর্ক। এ দুটি ঠিক রাখতে আমি অভিন্ন ফর্মুলা অবলম্বন করি। ট্রেনিং আর ডায়েট ঠিক রাখা খুব জরুরি। এসব ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতাটা খুব জরুরি। যদি শরীর সুস্থ থাকে, শরীরে কোন সমস্যা না থাকে এবং মনের দিক থেকে খুব ভাল অনুভব করেন, তখন আপনি মাঠেও ভাল খেলতে পারবেন। আবার যখন আপনার কনফিডেন্স কাজ করছে না। তখন আপনার নিজ থেকেই মনে হবে একটি লম্বা ব্যাটিং প্র্যাকটিস সেশন করলে ভাল হবে।’
‘তখন আমিও লম্বা ব্যাটিং সেশন কাটাই। তবে যখন মনে হয় আজ নেটে ব্যাটিংটা পারফেক্ট হয়েছে, তখন আমি নেটে সাত-আট মিনিটের বেশি কাটাই না। সাইমআর্ম বলের বিপক্ষেও ১০ মিনিটের বেশি ব্যাটিং করি না। কারণ আপনি যখন ভাল ব্যাটিং করতে থাকবেন, সেটা যদি বেশি বেশি করেন, তাহলে ভালোর চেয়ে খারাপই করে বেশি।’
তখন তামিম যোগ করেন, ‘আসলে প্র্যাকটিসের ধরন একেক জনের একেকরকম। আমি যেমন ১০-১৫ মিনিটের বেশি নেটে ব্যাটিং করি না। তবে আমি সর্বোচ্চ একাগ্রতা নিয়ে ব্যাট করি। আবার আমাদের মুশফিক আছে, সে ঘন্টার পর ঘন্টা নেটে কাটায়।’
বিরাট সহমত পোষণ করে বলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে একমত। এটা আসলে একেকজনের একেকরকম প্রক্রিয়া। আমাদের দলে যেমন তেজেস্বর পুজারা আছে, সে একাই তিন ঘন্টা নেটে ব্যাটিং করে। মনে হয় সবার ব্যাটিং একাই করে ফেলবে। তবে আমার মনে হয় প্র্যাকটিসের বাইরে কফি খেতেও বাইরে ঘোরার দরকার আছে। সবসময় একাগ্র চিত্তে ব্যাটিংয়ের কথা ভাবাও খুব কার্যকর- আমার তা মনে হয় না।’
Discussion about this post