ক্রীড়া ডেস্ক
সাধারণ ছুটি উঠিয়ে নেয়া দেখে কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিলেন জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসতে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশে করোনা জেঁকে বসেছে প্রবলভাবে। আগের যেকোন সময়ের চেয়ে করোনার সংক্রমণ এখন অনেক বেশি।
এরকম সংকট ও উদ্বেগজনক অবস্থায় স্বল্প পরিসরে অফিস-আদালত খুললেও, দেশের খেলাধুলা বিশেষ করে ক্রিকেট কার্যক্রম চালুর চিন্তাও রীতিমত অলিক কল্পনা। এর মধ্যে একটি খবর শুনে ক্রিকেট ভক্তরা চমকে উঠেছেন। তা হলো, বিসিবি ক্রিকেটারদের সংস্পর্শ ছাড়া অনুশীলনের উদ্যোগ নিয়েছে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এখন দেশে করোনার যারপরনাই খারাপ অবস্থা। প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ প্রাণ ঝড়ে যাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যাও উদ্বেগ জাগানিয়া। এমন পরিস্থিতিতে খুব জরুরী দরকার ছাড়া ঘর থেকে বের হতে চান না কেউই। সেখানে হোক সংস্পর্শহীন মানে একা একা অনুশীলন, তারপরও এরকম সংকট ও কঠিন অবস্থায় জাতীয় দলের অনুশীলন কার্যক্রম! খটকা লাগার মত ব্যাপারই বটে।
জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের শারীরিকভাবে তৈরি করার পাশাপাশি স্কিল ট্রেনিং করানোর জন্য বিসিবি সত্যিই কি বিসিবি এমন কোন উদ্যোগ নিয়েছে? জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কাছে আজ মধ্যাহ্নে এ প্রশ্ন রাখা হলে তিনি বলেন, ‘এখনকার পরিবেশ-প্রেক্ষাপটে ক্রিকেটারদের নিজ নিজ বাসার বাইরে অন্য কোথাও কোনরকম ফিটনেস ট্রেনিং, জিম ওয়ার্ক, স্কিল ট্রেনিং করানো অসম্ভব। আমরা এখনই অমন চিন্তাও করছি না।’
তবে নান্নু যোগ করেন, ‘তবে ক্রিকেটারদের প্রস্তুত রাখার কথাও ভাবতে হচ্ছে আমাদের। মাথায় রাখতে হচ্ছে, তাদের শারীরিকভাবে ফিট রাখা অতি জরুরি। পাশাপাশি স্কিল ট্রেনিংটাও দরকার। কিন্তু সেটা নির্ভর করছে আসলে করোনা পরিস্থিতির ওপর। এখন যে ভয়াবহ অবস্থা, এর মধ্যে ট্রেনিং ক্যাম্প আয়োজনের প্রশ্নই আসে না, আমরা তা চিন্তাও করছি না। তবে অবস্থা ভাল হলে যাতে ক্রিকেটাররা দ্রুতই অনুশীলন শুরু করতে পারে- সে চিন্তা আছে আমাদের।’
সেটা কবে নাগাদ হতে পারে? এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘এটা পুরোপুরি করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর কবে। এখন তো ঘর থেকেই বের হওয়া দায়। তাই আমরা অন্তত এই মাস দেখব, তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।’
‘আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, জাতীয় দলের অনুশীলন বলি আর ঘরোয়া ক্রিকেট বলি- যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় তথা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনরকম ট্রেনিং ক্যাম্প পরিচালনার সুযোগ নেই। এছাড়া ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশও মেনে চলতে হবে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা না উঠলে মাঠের কোন ক্রিকেটীয় কার্যক্রম চালু সম্ভব না।’
নান্নু আরও জানান, ‘শুনেছি সরকার নাকি করোনা মোকাবিলায় কিছুদিন পর বিভিন্ন জোন ভাগ করে দেবে। মিরপুর তথা শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের আশপাশ যদি রেড জোনে পড়ে তাহলে অনুশীলন, ফিটনেস ট্রেনিং আয়োজনের প্রশ্নই থাকবে না। এমনকি যাদের বাসা মিরপুরে তারাও বের হতে পারবে না।’
প্রধান নির্বাচকের শেষ কথা, ‘কবে শুরু করা সম্ভব হবে, তা এখন জানা নেই। সেটা আল্লাহই জানেন, কবে করোনার এ ভয়াবহতা কমবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে এমনিতে আমরা একটি ছক তৈরি করে রেখেছি। তা হলো, ক্রিকেটারদের শতভাগ ফিট হিসেবে গড়ে তুলতে প্রথমে তিন সপ্তাহের ফিজিক্যাল ট্রেনিং করাবো।’
‘এমনিতে সবাই কমবেশি ঘরে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করছে। আমরা জাতীয় দলের ট্রেনিং কার্যক্রমও শুরু করবো অন্তত তিন সপ্তাহের ফিজিক্যাল ট্রেনিং দিয়ে। তারপর দুই সপ্তাহ ধরে চলবে স্কিল ট্রেনিং। তবে আপাতত তা শুরুর কোন সম্ভাবনা নেই। সেটা কবে কখন, শুরু করতে পারব, তা এখন বলাও যাবে না। সেজন্য অপেক্ষায় থাকা ছাড়া উপায় নেই।’
Discussion about this post