ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রিকেটার হিসেবে দেশের ক্রিকেটকে দীর্ঘদিন সার্ভিস দেয়ার পর তার স্বপ্ন ছিল মাঠেই থাকবেন। ক্রিকেটের কাজই করবেন। কোথাও সুযোগ না পেলে কিউরেটর হিসেবে হলেও দেশের ক্রিকেটের জন্য কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন মোহাম্মদ রফিক।
কিন্তু এ কিংবদন্তিতুল্য স্পিনার দীর্ঘ এক যুগ বোর্ডে ধরনা দিয়ে, এর-ওর কাছে অনুরোধ করেও স্পিন কোচ হতে পারেননি। বোর্ডের অনুমোদিত কোচ হিসেবে চাকরি পাননি। এ নিয়ে হতাশা, বেদনার শেষ নেই, আক্ষেপও আছে রাজ্যের।
এখন আশা ছেড়ে দিয়েছেন রফিক। তার কথা, ‘এক যুগ হয়ে গেল। কত জনকেই তো বোর্ডে কোচের চাকরির জন্য অনরোধ করলাম। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। এতদিন যখন হয়নি। আর হবে বলেও মনে হয় না।’
অনেক সংগ্রামী ক্রিকেট জীবন তার। সেই বুড়িগঙ্গার ওপার থেকে নৌকায় দিনের পর দিন ঢাকায় এসে অনুশীলন করা। ঘাম ঝরিয়ে নিজেকে বিশ্ব মানের স্পিনার হিসেবে মেলে ধরা। সেই মাটির মানুষ, একদম মাটির কাছ থেকে উঠে আসা প্রকৃতিগত প্রতিভা রফিকই হতে পারতেন আদর্শ স্পিন কোচ।
বাংলাদেশে তো প্রশ্নই আসে না, ক্রিকেট বিশ্বেও বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে রফিকের মানের বোলার আছেন হাতে গোনা। তিনিই হতে পারেন দেশের সর্বোত্তম স্পিন কোচ। তার হাতের ছোঁয়ায় আরও রফিক গড়ে উঠতে পারে- এ প্রত্যাশা ও বিশ্বাস অনেক ক্রিকেট অনুরাগীর।
বিসিবি যে কেন দায়িত্ব দেয়নি এখনও, সে প্রশ্ন অনেকের। তবে কি দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা স্পিন ট্যালেন্টের হাতের ছোঁয়া পাবে না নতুন প্রজন্ম? খানিক আক্ষেপ মাখা কৌতূহলি প্রশ্নও অনেকের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে অনেক হতাশার মাঝেও আছে আশার আলো, রফিক নিজেই শোনালেন আশার বাণী।
শুক্রবার (৫জুন) রাতে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের সঙ্গে ইউটিউব লাইভে অনেক খোলামেলা কথার ভিড়ে রফিক জানিয়েছেন, তিনি খুব শীঘ্রই হয়তো একটি একাডেমির সাথে সম্পৃক্ত হতে যাচ্ছেন। সে ক্রিকেট একাডেমিটি করতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ কর্পোরেট হাউজ ‘বসুন্ধরা গ্রুপ’।
সেখানে মোহাম্মদ রফিককে শুভেচ্ছাদূত হওয়ার প্রস্তাবও নাকি দেয়া হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে রফিক বলেন, ‘সত্যি কথা কি! ১২ বছর হয়ে গেল, বিসিবিতে কিছু হলো না। জানি না আল্লাহ কত দিন হায়াত দিবেন। এখন আমি এ বছর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কোচ হিসেবে কাজ করছি, নিজে ‘ফ্রাইডে ক্রিকেট’ খেলছি।’
‘বসুন্ধরা একটি বড়সড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বসুন্ধরার মালিক শাহ আলম সাহেবের ছেলের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, তারা নিজ উদ্যোগে একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করবেন। একটি ক্রিকেট একাডেমিও তৈরি করা হবে। পাশাপাশি ইশতিয়াকের (বসুন্ধরার স্বত্বাধীকারি শাহ আলমের বড় ভাই সাবেক হকি তারকা ও হকি ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেকের ছেলে ও ক্রিকেট সংগঠক) সঙ্গেও কথা হয়েছে। তারা আমাকে জানিয়েছেন, আমরা এখানে একাডেমি করব, তাতে আপনি শুভেচ্ছাদূত হিসেবে থাকবেন। আজীবন কাজও করে যাবেন নিজের মত করে। আমি তাদের প্রস্তাব পেয়ে খুব খুশি। সানন্দে রাজি হয়েছি।’
‘কারণ অনেক দিন তো হলো, ১২ বছর পার করে ফেললাম। বোর্ডে কোচের চাকরির আশা ছেড়ে দিয়েছি। এখন আগামীতে বসুন্ধরার ক্রিকেট একাডেমি কেন্দ্রিক চিন্তা ভাবনাই করছি। বসুন্ধরার ঐ ক্রিকেট একাডেমি নিয়েই স্বপ্নের জাল বুনছি।’
Discussion about this post