ক্রীড়া ডেস্ক
প্রায় ত্রিশ বছর পর ইংল্যান্ডের শীর্ষ পর্যায়ের ঘরোয়া ফুটবল লিগ জিতেছে ঐতিহ্যবাহী ক্লাব লিভারপুল। লিগের সাত ম্যাচ বাকি থাকতেই নিশ্চিত হয়েছে তাদের চ্যাম্পিয়ন শিরোপা। তবে দেখা দিয়েছে একটি বিপত্তি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের (ইপিএল) নিয়মের মারপ্যাঁচে চ্যাম্পিয়ন মেডেল বা পদক নাও পেতে পারে লিভারপুলের কয়েকজন ফুটবলার।
প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান নিয়মানুযায়ী শিরোপাজয়ী দলের কোন খেলোয়াড় যদি পাঁচ ম্যাচের কম খেলেন পুরো মৌসুমে, তাহলে তিনি পাবেন না চ্যাম্পিয়ন মেডেল। এ নিয়মটি আগে ছিল দশ ম্যাচের। লিভারপুলের ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের শিরোপা জয়ী মৌসুমে ১০ ম্যাচ না খেলায় সেবার মেডেল পাননি ইসরায়েলি স্ট্রাইকার রনি রোজেনদাল।
এবার একই পরিণতি হওয়ার পথে তিন তরুণ তারকা হার্ভি এলট, কার্টিস জোনস এবং নিকো উইলিয়ামসের। তারা তিনজনই চলতি মৌসুমে খেলেছেন দুইটি করে ম্যাচ। ফলে চ্যাম্পিয়ন মেডেল পাওয়ার যোগ্যতা অর্জনে এখনও খেলতে হবে তিনটি ম্যাচ। শিরোপা নিশ্চিত হওয়ায় বাকি ম্যাচগুলোতে তাদের নামালে হয়তো পাঁচ ম্যাচ পূরণ হবে।
কিন্তু যদি না নামানো হয়, তাহলে লিগে দুইটি করে ম্যাচ খেললেও মেডেল পাওয়া হবে না এলট, কার্টিসদের। এমতাবস্থায় এগিয়ে এসেছেন দলের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ যদি তার দলের কোন খেলোয়াড়কে মেডেল নাও দেয়, ক্লপ নিজের তরফ থেকে প্রয়োজনে নিজের পদকটিই দিয়ে দেবেন।
নিয়ম মোতাবেক এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ৪০টি মেডেল পাবে লিভারপুল ক্লাব। এর মধ্যে ২১ জন খেলোয়াড় নিশ্চিতভাবেই পাবেন এই মেডেল। যারা অন্তত পাঁচটি করে ম্যাচ খেলেছেন এবারের লিগে। অনিশ্চিত হার্ভি এলট, কার্টিস জোনস এবং নিকো উইলিয়ামসের মেডেল।
এটিকে অযৌক্তিক মনে করছেন ক্লপ। তার মতে স্কোয়াডের সঙ্গে থাকা সবারই মেডেল পাওয়া উচিৎ। যদি তা না হয়, তাহলে নিজ দায়িত্বে স্কোয়াডের সবার জন্যই মেডেলের ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে এ জার্মান কোচ বলেছেন, ‘মানুষ যদি না বুঝে যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে পুরো স্কোয়াডের ভূমিকা কত বেশি থাকে, তাহলে আমার কিছু করার নেই আসলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি কোন ম্যাচ না খেললেও স্কোয়াডের সদস্য হিসেবে মেডেল পাওয়া উচিৎ। আপনি যদি দলের দ্বিতীয় গোলকিপার হন কিংবা (পাঁচের) কম ম্যাচ খেলে থাকেন, তাও আপনার মেডেল পাওয়া উচিৎ। কারণ আপনি দলের সঙ্গে ৫০ লাখ বার অনুশীলন করেছেন। আর দল হিসেবে আপনি যদি শীর্ষ পর্যায়ে বেশি অনুশীলন না করেন, তাহলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ারও কোন সুযোগ নেই।’
নিজ দলের খেলোয়াড়দের ভরসা দিয়ে ক্লপ বলেন, ‘এসব ছেলেরা অবশ্যই মেডেল পাবে। আমি নিজে ব্যবস্থা করে দেবো। তারা আমার মেডেলও নিতে পারবে। তারা মেডেল প্রাপ্য এবং অবশ্যই সেটি পাবে। প্রিমিয়ার লিগ যদি না দেয়, তাহলে আমিই দেবো।’
প্রিমিয়ার লিগের এ নিয়মের মারপ্যাঁচে চ্যাম্পিয়ন হয়েও মেডেল না পাওয়ার তালিকায় রয়েছে অনেক তারকা খেলোয়াড়ের নামও। তারা হলেন গ্যারি নেভিল (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ১৯৯৩-৯৪), নেমানিয়া ম্যাটিচ (চেলসি, ২০০৯-১০), ফেডরিখ মাচেদা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ২০০৮-০৯), হোসে বসিংগা (চেলসি, ২০০৯-১০), মোহামেদ সালাহ (চেলসি, ২০১৪-১৫) প্রমুখ।
Discussion about this post