ক্রীড়া ডেস্ক
অনেকের চোখে, দেশের ক্রিকেটের প্রথম আন্তর্জাতিক তারকা তিনি। আমিনুল ইসলাম বুলবুল, আকরাম খান, মোহাম্মদ রফিক, মিনহাজুল আবেদিন নান্নুরা দেশের গণ্ডিতে সুপারস্টার ক্রিকেটার হলেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রথম বড় নাম করেছিলেন ১৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ আশরাফুল।
২০০১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচেই করেন সেঞ্চুরি, তখন তার বয়স মাত্র ১৭ বছর ৬১ দিন। প্রায় দেড়শ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এত অল্প বয়সে সেঞ্চুরি করতে পারেননি বিশ্বের আর কোন ক্রিকেটার। অভিষেকের এই সেঞ্চুরি দিয়েই দেশের ক্রিকেটে অমর হয়ে থাকতে পারতেন আশরাফুল।
তিনি সেখানেই থামেননি। বিশ্বের বড় দলগুলোর বিপক্ষে দেশের সব প্রথম জয়ের ম্যাচে রেখেছেন অবিস্মরণীয় অবদান। বিশেষ করে ২০০৫ সালে অজেয় অস্ট্রেলিয়াকে ওয়ানডেতে হারানোর ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে তৎকালীন নাম্বার ওয়ান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতা ম্যাচে খেলা ৮৭ রানের ইনিংসটি দেশের যেকোন ক্রিকেটপ্রেমীর মনে গেঁথে আছে আজও।
তবে মোহাম্মদ আশরাফুল নামটি শুনলে এখন আর শুধু অভিষেকে সর্বকণিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান কিংবা কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়া বধের নায়কের চেহারাই ভেসে ওঠে না, একইসঙ্গে উঁকি দেয় ম্যাচ ফিক্সার মোহাম্মদ আশরাফুলের কথাও। ২০১৩ সালের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ফিক্সিং করে নিষিদ্ধ ছিলেন ৫ বছর।
সাজা ভোগ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন আশরাফুল। প্রায় সব সাক্ষাৎকারেই স্পষ্ট বোঝা যায় কতটা অনুতপ্ত তিনি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে জাতীয় দলের হয়েও করেছেন বেশ কিছু স্পট ফিক্সিং। তবে সেসব প্রমাণিত সত্য নয়। আশরাফুল নিজেও কখনও মুখ খোলেননি এ ব্যাপারে।
ফিক্সিংয়ের কালো অধ্যায় পেরিয়ে আবারও জাতীয় দলে ফেরার সংকল্প রয়েছে দেশের ক্রিকেটের প্রথম মহাতারকার। ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতিযোগিতাপূর্ণ আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের এক আসরে করেছেন রেকর্ড পাঁচ সেঞ্চুরিও। তবে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছেন না কোনভাবেই। যে কারণে জাতীয় দলের আশপাশেও আসতে পারেননি তিনি।
আজ (মঙ্গলবার) পূরণ হলো আশরাফুলের ৩৬ বছর। ১৯৮৪ সালের আজকের দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন ছোটখাটো গড়নের এ প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান। শুভ জন্মদিন মোহাম্মদ আশরাফুল। বয়স ৩৬ হলেও, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন এখনও দেখেন তিনি। জন্মদিনে আশরাফুলের এই স্বপ্নপূরণের জন্য শুভকামনা।
Discussion about this post