ক্রীড়া ডেস্ক
২০ বছর পর অবশেষে ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় ধরা দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে! পুনর্জন্মের টেস্টে স্বাগতিকদের ৪ উইকেটে হারিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। ২০০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ে সফররতরা। তবে ব্ল্যাকউডের ৯৫ রানের ইনিংসে ভর করে সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় হোল্ডার বাহিনী। দুই ইনিংসে ৯ উইকেট শিকার করে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হন ক্যারিবিয়ান পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো সফরকারীরা।
স্মৃতির মণিকোঠায় ম্যাচটা হয়ে থাকবে বিশেষ। যে ম্যাচটার মধ্য দিয়ে লকডাউনে ১১৭ দিনের বন্ধাত্ব ঘুঁচেছিলো ক্রিকেটে; সাদা পোশাকের সেই ম্যাচের শেষটা হলো রঙিন। পাঁচ দিনের এলিট ফরম্যাটে ২২ গজের লড়াইয়ে পালটে গেলো খাতা কলমের হিসেব। র্যাংকিংয়ে ৮ নম্বরে থাকা ক্যারিবিয়দের কাছে আরও একবার হারের তেতো স্বাদ পেলো ৪ নম্বরে থাকা ইংল্যান্ড।
সাউদাম্পটনে শেষ দিনের শুরুটা জানান দিচ্ছিলো একটা নাটকীয় ম্যাচেরই। ২৮৪ রান আর হাতে দুই উইকেট নিয়ে নিজেদের লড়াইয়ের পুঁজিটা যতটা সম্ভব বাড়াতে নামেন মার্ক উড আর জফরা আর্চার। তবে গ্যাব্রিয়েলের আগুনে বোলিংয়ের সামনে দ্রুতই নতি শিকার করে থ্রি লায়নদের টেলএন্ডার। শেষ দুটো উইকেট ঝুলিতে পুড়ে ৫ উইকেট শিকার করেন এই উইন্ডিজ পেসার। ৩১৮ রানে অলআউট বেনস্টোকস বাহিনী। তাতে সফরকারীদের সামনে লক্ষ্যটা ২০০ রানের।
চতুর্থ ইনিংসে রানটা যে হেসে খেলে জেতার নয়। হয়তো একটু বেশিই নির্ভার ছিলেন ক্যারিবিয়ান টপ অর্ডার। তবে হুঁশ ফিরতে বেশিক্ষণ দেরি করতে হয়নি। আর্চার তোপে দলীয় ৭ রানেই ২ উইকেট নেই। সঙ্গে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন ক্যাম্পবেলও। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও বেশিক্ষণ টেকেননি শাই হোপ। মাত্র নয় রান করেই মার্ক উডের শিকার হোন এই হার্ডহিটার। ২৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা।
এরপরের গল্পটা একেবারে আলাদা। ব্ল্যাকউডকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতে মনোযোগী রোস্টন চেজ। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আর কোনো উইকেট না হারিয়েই আসে দলীয় শতক। তবে আর্চারের বাধায় আবারও পার্টনারশিপে ছেদ। ব্যক্তিগত ৩৭ রানে ফেরেন চেজ। এবার ডউরিচকে সঙ্গে নিয়ে বাকি অর্ধেক পথে এগুতে থাকেন ব্ল্যাকউড।
চালকের আসনে বেশ ভালোভাবেই তখন বহাল ক্যারিবিয়রা। তবে স্টোকসের আঘাতে আবারও চিন্তার ভাজ উইন্ডিজ শিবিরে। ৬৮ রানের জুটি ভেঙ্গে প্রথম ইনিংসের ফিফটি হাকানো ডওরিচকে ফেরান ইংরেজ কাপ্তান। এখানেই শেষ নয়। সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকা ব্ল্যাকউডকেও অ্যান্ডারসনের তালুবন্ধি করেন স্টোকস। তবে ততক্ষণে তীরের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ক্যারিবিয় সাগরের নাবিকরা। রিটায়ার্ড হার্ট ক্যাম্পবেলকে সঙ্গে করে বাকি পথ পাড়ি দেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ৪ উইকেটের জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর ২য় ইনিংসেও ৫ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। এ জয়ে সিরিজে ১-০’র লিড পেলো ক্যারিবিয়ানরা।
Discussion about this post