ক্রীড়া ডেস্ক
২০০৬ সালে কেউ যদি বলতো, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একজন হবে বিশ্বসেরা- তাহলে নেহায়েত পাগলই ভাবা হতো সেই ব্যক্তিকে। কিন্তু সে বছরই আন্তর্জাতিক মঞ্চে এসে, মাত্র তিন বছরের মাথায় ঠিকই বাংলাদেশের নামকে বিশ্বের সেরা অবস্থানে নিয়ে গেছেন দেশের ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে ২০০৬ সালের জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে যায় বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জিতে শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে স্বাগতিকরা। তাই শেষ ম্যাচে স্কোয়াডে থাকা দুই তরুণ ক্রিকেটারকে অভিষেক করায় বাংলাদেশ। যারা কি না পরের ১৪ বছরে নিজেদেরকে বানিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট সমর্থক।
একজন ছিলেন মুশফিকুর রহীম, অন্যজন সাকিব আল হাসান। এর আগের বছরই টেস্ট খেলে ফেলায় আন্তর্জাতিক মঞ্চটা নতুন ছিল না মুশফিকের জন্য। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার সাকিব সেদিনই প্রথম নেমেছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, জানান দিয়েছিলেন নিজের আগমনী বার্তা।
দিনটি ছিল ৬ আগস্ট, ২০০৬ অর্থাৎ আজ থেকে ঠিক ১৪ বছর আগে আন্তর্জাতিক মঞ্চে জন্ম হয় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। তিন বছরের মধ্যে তিনি বসেন ওয়ানডে অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ের শীর্ষে, আরও দুই বছর পর আরোহণ করেন তিন ফরম্যাটেরই র্যাংকিংয়ের শীর্ষে। যা করতে পারেননি বিশ্বের আর কোনো ক্রিকেটার।
কোনো সন্দেহ ছাড়াই বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। যার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও। ব্যাট হাতে আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬০৬ রান করেছিলেন সাকিব। সঙ্গে ছিল বল হাতে এক ম্যাচে ৫ উইকেটসহ মোট ১১টি শিকার।
শুধু বিশ্বকাপ নয়, গত ১৪ বছর ধরেই নিজের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে চলেছেন সাকিব। নিজের অভিষেক ম্যাচে ব্যাট হাতে ৪৯ বলে অপরাজিত ৩০ ও বল হাতে ৩৯ রান খরচায় ১ উইকেট শিকার দিয়ে শুরু। এখনও পর্যন্ত সফলতার সঙ্গে খেলেছেন ৩৩৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। একবারও বাদ পড়তে হয়নি অফফর্মের কারণে।
টেস্ট ক্রিকেটে এখনও পর্যন্ত ৫৬ ম্যাচে ৫ সেঞ্চুরি ও ২৪ হাফসেঞ্চুরিতে সাকিবের ৩৮৬২ রান, ব্যাটিং গড় ৩৯.৪০। বল হাতে ইনিংসে ১৮ বার পাঁচ উইকেট ও ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন দুইবার। দেশের একমাত্র বোলার হিসেবে দুইশ টেস্ট উইকেট পাওয়া সাকিবের বর্তমান শিকারসংখ্যা ২১০টি।
ওয়ানডে ফরম্যাটে ২০৬ ম্যাচ খেলে ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৭ ফিফটিতে করেছেন ৬৩২৩ রান। ব্যাটিং ৩৭.৮৬, রান করেছেন ৮২.৭৫ স্ট্রাইকরেটে খেলে। একদিনের ক্রিকেটে বল হাতে ফাইফার নিয়েছেন ২ বার, মোট শিকার ২৬০ উইকেট। আর টি-টোয়েন্টিতে ৭৬ ম্যাচ খেলে ১৫৬৭ রানের পাশাপাশি ৯২ উইকেট দখল করেছেন তিনি।
Discussion about this post