খেলাধূলা ডেস্ক
আজ সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার শেষ দিন। কোনো খেলোয়াড়ের জীবন নিয়ে এমন ক্ষণ গণনা একটা বিরল ব্যাপার। কিন্তু তাই হয়েছে। অবশেষে সেই অপেক্ষার পালা শেষ হয়ে এলো।
গত বছর ২৯ অক্টোবর দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব; এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। ফলে আজ শেষ হয়ে যাচ্ছে নিষেধাজ্ঞার সেই সময়টা। আগামীকাল থেকে আবার সব ধরনের ক্রিকেট খেলার জন্য উন্মুক্ত সাকিব। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারকে আবার দল নির্বাচনের জন্য পাওয়া যাবে, এটা স্বস্তি দিচ্ছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকে।
তিন বার বাজিকরের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েও আইসিসি বা বিসিবিকে জানাননি সাকিব। সেই অপরাধে গত বছর শাস্তি পেয়েছিলেন তিনি। সেটা ছিল বাংলাদেশের জন্য একটা বজ্রাঘাতের মতো ব্যাপার। ২০২০ সালে বাংলাদেশের এক গাদা ম্যাচ খেলার কথা ছিল। সেই সময়টা সাকিবকে ছাড়া পাড়ি দেওয়ার সম্ভাবনাই আতঙ্কিত করেছিল সবাইকে। অবশ্য সাকিবকে ছাড়া খুব বেশি ম্যাচ খেলতে হয়নি বাংলাদেশকে। করোনা এসে সবাইকেই মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে।
সাকিব অক্টোবরে নিষিদ্ধ হওয়ার আগে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ২১ সেপ্টেম্বর; আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সে ম্যাচেও ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এরপর বাংলাদেশ ভারত, পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭টি টি-টোয়েন্টি, ৪টি টেস্ট এবং ৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে। ১১ মার্চ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর থেকে করোনার কারণে খেলাধুলা একেবারেই স্থগিত হয়ে আছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দিয়েই মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিতে গত ২ সেপ্টেম্বর ভোররাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশেও ফিরেছিলেন এই অলরাউন্ডার। ৫ অক্টোবর থেকে নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে দুই ক্রিকেট গুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অধীনে নিবিড় অনুশীলনে নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াইও শুরু করেছিলেন। তবে শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ায় সেই পর্ব স্থগিত করে সাকিবও ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী-সন্তানের কাছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি শুরু হতে যাওয়া ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি দিয়েই ফিরবেন ক্রিকেটে। দেশেও ফিরবেন এর ঠিক আগেই।
নিষিদ্ধ থাকলেও নিষেধাজ্ঞার সময়ে খুব বেশি ক্রিকেট অবশ্য মিস করতে হয়নি তাঁকে। কারণ করোনাভাইরাসের থাবায় এমনিতেও বাংলাদেশের সব ক্রিকেটারকে সাত মাস বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হয়েছে। তবু তাঁরা অবশেষে ক্রিকেট খেলতে পারছেন। পারছিলেন না সাকিবই। যদিও এর মধ্যেও তাঁর জীবন থেমে থাকেনি। এই সময় দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন। নিজের নামে ফাউন্ডেশন খুলে করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। ফেরার প্রস্তুতি নিতে দেশে এসে করে গেছেন বিজ্ঞাপনের শুটিংও।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলছিলেন, সেরা ক্রিকেটারকে নির্বাচনের জন্য পাওয়া যাবে, এটা তার জন্য স্বস্তির ব্যাপার, ‘অবশ্যই এটা স্বস্তির। ওর মতো বেস্ট একজন ক্রিকেটারকে পেলে দল নির্বাচন সহজ হয়। আমরা তো চাই ও নিজেকে ফিট করে তৈরি থাকুক।’
Discussion about this post