খেলাধূলা ডেস্ক
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে যখন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে বাদ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করছেন প্রধান নির্বাচক, মিরপুর ১১ নম্বরে তখন মিষ্টি খাচ্ছেন মাশরাফি! পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি মিশর ঘুরতে গিয়ে মিষ্টি এনেছেন তার জন্য। স্বভাবসুলভ দুষ্টুমিতে মাশরাফি বললেন, “মিষ্টি খেয়ে বাদ পড়া উদযাপন করছি…!”
তার হাসি-তামাশায় ফুটে উঠছে স্বাভাবিক থাকার বার্তা। তবে মনের গহীনে আঁচড় লাগার কথা বেশ তীব্রভাবেই। দেশের মাটিতে ২০১১ বিশ্বকাপ খেলতে না পারা তার এক জীবনের আক্ষেপ। সেবার তবু কারণ বা অজুহাত ছিল ফিটনেস সমস্যা। কিন্তু বাদ বলতে যেটা বোঝায়, সেই স্বাদ তো পেলেন ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম!
২০১৯ বিশ্বকাপে দলের বিপর্যয় আর নিজের নিদারুণ ব্যর্থতায় প্রেক্ষাপট অনেকটা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তার পরও তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন লড়াই চালিয়ে যাওয়ার। বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে স্বেচ্ছায় নিজেকে সরিয়ে নেওয়া, গত মার্চে জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে অধিনায়কত্বকে বিদায় জানানো, সবই ছিল স্রেফ ক্রিকেটার হিসেবেই দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইয়ের অংশ।
এরপর কোভিড বিরতি এসেছে দলের বড় ধাক্কা হয়ে। ৮-৯ মাস আগের বাস্তবতা পাল্টে গেছে অনেকটা। তার নিজের পরিকল্পনায় চোট লেগেছে, দলের ভাবনাও বদলে গেছে। ক্যারিয়ার জুড়ে অসংখ্য প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে গৌরবের চূড়ায় নিজেকে তুলে নিয়েছেন যিনি, এবারের দুঃসময়েও তিনি ঠিকই হাল ছাড়েননি প্রতিবন্ধকতার কাছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দল ঘোষণার আগে তার সামনে একটিই সুযোগ ছিল নিজেকে উপস্থাপনের, বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ। এই আসরে চার ম্যাচের তিনটিতেই তার পারফরম্যান্স ছিল ভালো, একটিতে ৫ উইকেট নিয়ে তিনিই ছিলেন নায়ক। তার যেটুকু করার ছিল, তা তিনি করেছেন।
তাকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেছেন, দলকে নতুনভাবে গুছিয়ে সামনে এগোতে ও ২০২৩ বিশ্বকাপে চোখ রেখে নির্বাচক কমিটি, টিম ম্যানেজমেন্ট সবাই সম্মিলিতভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখানে মাশরাফির কিছু করার নেই। বাদ পড়ার পর ছোট্ট প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, বাস্তবতা তিনি মেনে নিচ্ছেন। পাশাপাশি খেলা চালিয়ে যাওয়ার আগের সিদ্ধান্তেও অটল আছেন।
“এটা পেশাদার জগৎ। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি পেশাদারীভাবেই নিচ্ছি এটাকে। আর কিছু বলার নেই। আগেও বলেছিলাম, জাতীয় দলে সুযোগ না পেলেও খেলা চালিয়ে যাব। এখনও সেটিই বলছি। আপাতত আর কিছু ভাবছি না।”
বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক, সফলতম বোলার ও বহু লড়াই জয়ের সেনাপতিকে আপাতত অপেক্ষায় থাকতে হবে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরুর। হয়তো ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবার তাকে দেখা যাবে বল হাতে ছুটতে।
Discussion about this post