খেলাধূলা ডেস্ক
দেশের চেয়ে সাকিবের কাছে আইপিএলই বড়। আবারও প্রমাণ হতে যাচ্ছে এটা। কারণ আইপিএল খেলার জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে ছুটি ছেয়েছেন সাকিব আল হাসান। বিসিবিও সেই আবেদন মঞ্জুর করে নিয়েছে। অর্থাৎ আইপিএল খেলার জন্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলা হবে না সাকিবের।
নিষেধাজ্ঞার কারণে এক বছর আইপিএল খেলতে পারেননি। এবার আবার সেই সুযোগ এসে গেছে। সাবেক ফ্রাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স তিন কোটি ২০ লাখ রুপিতে কিনে নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে। আগামী এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আইপিএলের ১৪তম আসর।
এমনিতেই একের পর এক ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে নিয়মিতই বাংলাদেশের বিভিন্ন সিরিজ কিংবা টুর্নামেন্ট মিস করেন সাকিব। গত কয়েকবছর এটা যেন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, আইপিএল এলে সাকিব সুস্থ হয়ে যান এবং দিব্যি ভারতের এই ঘরোয়া টুর্নামেন্টটি তিনি খেলেন। বিষয়টা কাকতালীয়ও হতে পারে।
এবারও তিনি ইনজুরি আক্রান্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট চলাকালে বাম-পায়ের উরুতে চোট পেয়েছিলেন তিনি। যে কারণে ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারেননি। কবে সুস্থ হবেন, সেটাও অনিশ্চিত।
এরই মধ্যে আগামী কিছুদিনের মধ্যে দেখবেন তৃতীয় সন্তানের মুখ। যে কারণে স্ত্রীর পাশে থাকতে এরই মধ্যে বিসিবিতে আবেদন করে ছুটি নিয়েছেন সাকিব। ফলে, নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া হচ্ছে না বাংলাদেশের সেরা এই ক্রিকেটারের।
সাকিব আল হাসানকে ছুটি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান। তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সাকিব আগেই মৌখিকভাবে ছুটি চেয়ে রেখেছে। বিসিবির সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর একদিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ই-মেইলের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়েছেন ক্রিকেট অপারেশন্সে।
আকরাম খান বলেন, ‘সাকিব এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি খেলতে চায়। টেস্ট খেলতে চায় না। আইপিএলের জন্য ছুটি চেয়েছে সে। আমরাও মনে করি কেউ খেলতে না চাইলে তাকে জোর করে খেলিয়ে লাভ নেই। তাই সাকিবকে ছুটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড।’
আকরাম খান এটাও জানিয়েছেন, সাকিবের ছুটির বিষয়টি নিয়ে বোর্ডে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এরপরই তাকে ছুটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাকিবকে জোর করে টেস্টে খেলালেও তার কাছ থেকে সর্বোচ্চ সার্ভিসটা পাওয়া যাবে না বলেই মনে করে বোর্ড। তবে আমরা এটাও বুঝি, এতে একটা বাজে উদাহরণ সৃষ্টি হবে।’
আইপিএলের সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে সাধারণত এপ্রিলে শুরু হয়ে টুর্নামেন্টটি চলে পুরো মে মাস জুড়ে। এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দুটি সফর বিনিময় করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা দল বাংলাদেশে আসবে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে।
এরপর মে মাসে তিন ওয়ানডের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দল যাবে শ্রীলঙ্কায়। সিরিজ দুটির সূচি এখনো চূড়ান্ত না হলেও এপ্রিল-মে মাসে যে সিরিজগুলো হবে, তা চূড়ান্ত। তবে টেস্টে না খেললেও, ওয়ানডে সিরিজ খেলবেন বলে সাকিব জানিয়েছেন বিসিবিকে।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের আইপিএলে খেলার ব্যাপারে বিসিবির একটা নীতিমালা রয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, আইপিএলে খেলার জন্য নির্বাচিত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ১৯ মের পর আর টুর্নামেন্টটিতে খেলতে পারবেন না।
এমনকি এর আগেও যদি আইপিএলের সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো সিরিজ হয়, তাহলেও খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের জন্য ছাড়তে হবে। এছাড়া জাতীয় দলের খেলার সময় খেলোয়াড়েরা অন্য কোথাও খেলতে পারবেন না, এমন কথা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিসিবির চুক্তিতেও আছে।
সাকিব আল হাসানকে তো আইপিএলে খেলার জন্য বিসিবি ছুটি দিয়েছে। তো, মোস্তাফিজুর রহমানের বেলায় কী করবে বিসিবি? মোস্তাফিজকে কিনেছে রাজস্থান রয়্যালস। তিনি আইপিএল খেলার জন্য বিসিবির কাছে ছুটি চাইলে তো তাকেও সেই সুযোগ দিতে হবে। বিসিবি কি এবার সেই সুযোগ মোস্তাফিজকেও দেবে?
Discussion about this post