বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন তিনি। ব্যাট বলে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেন ২০০৯ সালে। ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হওয়ার মধ্য দিয়ে। এর পরে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও বিশ্ব সেরার খেতাবটা নিজের করে নিয়েছেন সাকিব।
দেশের ক্রিকেটে সাকিবের অবদান কম নয়। বাংলাদেশের অর্জনের সাক্ষী হয়ে আছেন বাঁ-হাতি এ অলরাউন্ডার। অনেক অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছেন তিনি। কখনো বল হাতে কখনো বা আবার ব্যাট হাতে, কখনো ব্যাট-বল হাতে সমান পারদর্শিতা দেখিয়ে।
সাকিব এবার সামনে এগিয়ে এসেছেন দেশের স্বার্থে। ভবিষ্যতের তারকা ক্রিকেটার বের করতে নিজ উদ্যোগেই মাঠে নেমে পড়েছেন তিনি। নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন ক্রিকেট একাডেমি। রাজধানীর অদূরে নারায়নগঞ্জের কেন্দুয়ার কাঞ্চন পৌরসভায় মাসকো গ্রুপের সহযোগিতায় বিশ্বমানের ক্রিকেট একাডেমি গড়েছেন তিনি।
এবার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হলো মাসকো সাকিব ক্রিকেট একাডেমির। দোয়া মাহফিলের মধ্যদিয়ে একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যদিও সাকিব সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে সাকিবের ক্রিকেট ব্যস্ততা যখনই থাকবেনা, তখনই এসে ছাত্রদের স্পেশাল ক্লাস নিবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, শুধু সাকিব-ই নন, দেশের সব ক্রিকেট তারকাই এখানে আসবেন, ছাত্রদের পরামর্শ দিয়ে যাবেন, করাবেন বিশেষ ট্রেনিং-দাবি একাডেমি প্রতিষ্ঠাতাদের।
একাডেমির প্রধান কোচের দায়িত্বে রয়েছেন দেশ সেরা ক্রিকেট কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
প্রাথমিকভাবে ১৪৫ জন ক্রিকেটদের নিয়ে একাডেমির যাত্রা শুরু হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৩ থেকে শুরু করে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যন্ত ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন সালাউদ্দিন। সব শ্রেণির ক্রিকেটারদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে এই ক্রিকেট একাডেমিতে।একাডেমি উদ্বোধনের প্রথম দিন দেওয়া হয়েছে সবাইকেই জার্সি।
এই একডেমিতে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে ২৮ জন ক্রিকেটারের। এছাড়া কোচদের জন্যও রয়েছে থাকার ব্যবস্থা। উন্নত পরিবেশে খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পুরো একাডেমিতে রয়েছে মোট ১৯টি পিচ। একাডেমির কাছে ভালো মানের থাকার হোটেলও নির্মাণ করা হচ্ছে যাতে করে বিদেশি কোনো দল খেলতে আসলে যেন থাকার সমস্যা না হয়। তাই বলাই যায় যে বেশ পরিকল্পিত একটি একাডেমি হচ্ছে সাকিবের মাসকো ক্রিকেট একাডেমি।
একাডেমির উদ্বোধনকালে সালাউদ্দিন নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন এই একাডেমি থেকেই সাকিব-তামিমের চেয়ে বড় বড় ক্রিকেটার বের হয়ে আসবে যারা সবাইকে ছাপিয়ে যাবে।
সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি মাসকো গ্রুপকে ধন্যবাদ দিতে চাই যে তারা এমন একটা সুযোগ তৈরি করে দেওয়ায়র জন্য এতো সুন্দর একাডেমি দেওয়ার জন্য। আমি নিজেও ভাবিনি যে এতো বড় সুন্দর একটা একাডেমি হবে। আমি যখন শুরু করতে চেয়েয়েছিলাম তখন ভেবেছিলাম একটা মাঠ আর পিচ হলেই চলবে। কিন্তু এখন নিজেও ভাবতে পারি নি যে এতো সুন্দর একটা ইনডোর পাবো,জিমনেশিয়াম পাবো। এটা যে কোনো কোচের জন্যই একটা স্বপ্নের মতো। এটার জন্য যারা পরিশ্রম করেছে তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’
‘আমি সবসময়ই মনে করি যে আমার পরবর্তী ক্রিকেটার যদি সাকিব তামিমের চেয়ে বড় না হয় তবে আমার এখানে এসে লাভ কি। আমি কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই বলে যে আমি সাকিব হবো আমি তামিম হবো, জাতীয় দলে খেলবো।পরিশ্রম করে মনযোগ দিয়ে খেললে জাতীয় দলে খেলা যায়। আমার লক্ষ্য যদি যয় সাকিব তামিম হবো তাহলে তাদের কাছাকাছি যেতে পারব কিন্তু তাদের ছাড়িয়ে যেতে পারব না,দেশের ক্রিকেট এগোবে না। আমি সবাইকে বলবো যারা এখানে এসেছে যে তোমাদের স্বপ্নটাকে বড় করো। স্বপ্ন না থাকলে বড় হওয়া সম্ভব না।’
একাডেমির কার্যক্রম শুরু হলেও জিমনেশিয়ামের কাজ এখনো শেষ হয়নি, সেটা নির্মাণাধীন রয়েছে। আগামী এপ্রিল মাসে জিমনেশিয়ামের কাজ শেষ হবে বলে জানা গেছে। ভবিষ্যত প্রজন্মের তারকা ক্রিকেটার এই সাকিবের একাডেমি থেকে উঠে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা দেশসেরা এই কোচের।
Discussion about this post