দেশের ফুটবলে সর্বত্র আলোচনায় অনলাইন বেটিং। অনলাইন বেটিংয়ে সম্পৃক্ত থেকে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে আরামবাগ। অর্থাৎ বাফুফের চিঠির জবাবে ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা সম্পূর্ণই অজ্ঞ। তবে ক্লাবের কেউ এর সঙ্গে জড়িত হলে তিনি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে বাফুফেকে সহযোগিতার কথা বলেছেন।
শুধু তা-ই নয়, ইয়াকুব জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে ক্লাবে অভ্যন্তরীণভাবে তদন্ত শুরু করেছেন তারাও, ‘বাফুফের চিঠি ছাড়াও গত দুই ম্যাচ আগে থেকে আমাদের দল নিয়ে পাতানো ম্যাচের নানা কানাঘুষা আমিও শুনেছি। কিন্তু আমি বুঝে পাইনি, যে দল কোনো ম্যাচই জিততে পারছে না, তারা কোন স্বার্থে ম্যাচ পাতাবে। তবে এখন আরো নানা রকম অভিযোগ শুনছি, যেমন—বেটিংয়ের ব্যাপারটা। এ ব্যাপারে আসলেই কেউ জড়িত কি না, তা আমরাও জানতে চাই। বলতে পারেন ক্লাবে একটা অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছি আমরা। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’ অবশ্য তাঁরা কোন তদন্ত কমিটি করেছেন, এমনটা জানাননি ইয়াকুব।
বেটিংয়ে সম্পৃক্ত থেকে ‘ফিক্সিং’-এর অভিযোগ ফুটবলে নতুন। সাবেক ফুটবলার আব্দুল গাফফার যেমন বলছিলেন, ‘ম্যাচ পাতানো বলতে আগে আমরা দুটি ক্লাবের অংশগ্রহণই বুঝতাম। কিন্তু এখন বেটিংকে প্রভাবিত করার জন্য যে খেলোয়াড়, কর্মকর্তারাও নির্দিষ্ট কিছু করতে পারেন, এ ব্যাপারটা ফুটবলে একেবারেই নতুন।’ আর এটা ভীষণ ভয়াবহ উল্লেখ করে গাফফার চান এর মূল উৎপাটিত হোক, ‘এফসি এবং বাফুফে এটা নিয়ে যখন একসঙ্গে কাজ করছে, তাতে আশা করতে পারি আমরা এ নিয়ে একটা ইতিবাচক ফল পাব। গোড়াতেই এটাকে আমাদের নির্মূল করতে হবে, তা শিকড়-বাকড় ছড়িয়ে পড়ার আগেই।’
আরামবাগ ও ব্রাদার্সের মোট পাঁচটি ম্যাচ নিয়ে এএফসি তাদের সন্দেহের কথা জানিয়েছে বাফুফেকে। এর পরই বাফুফে চিঠি দেয় তাদের। তাতে ম্যাচ পাতানোয় ক্লাব দুটির সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে তাদের জবাব জানতে চায় ফেডারেশন। দুই দফায় চিঠি পাঠানো হয়। তাতে ব্রাদার্স আগেই জবাব দিলেও আরামবাগ তার জবাব দিয়েছে কাল। যখন বাফুফে থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা হয়। আরামবাগের সম্পাদক অবশ্য বলেছেন তিনি একটি চিঠিই পেয়েছেন, আগের দিন খেলা থাকায় তার জবাব দিয়েছেন কাল। বাফুফে সেই জবাব নিয়ে এখন পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। ফেডারেশন সম্পাদক আবু নাঈম জানিয়েছেন, ‘তারা যেহেতু অভিযোগটি অস্বীকার করছে এখন আমরা আরো বিস্তারিত এবং সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় ক্লাবগুলোর কাছে জানতে চাইব। যতভাবে সম্ভব আমরা সঠিক তথ্যটা বের করে আনতে চাই। এরপর সেটি আমরা আমাদের পাতানো ম্যাচ শনাক্তকরণ কমিটির কাছে দেব। তারা সেগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনে আরো তদন্তের কথা বলতে পারেন।’ আগামী মাসের মধ্যে এএফসিকেও এ ব্যাপারে রিপোর্ট করার আছে বাফুফের।
অভিযুক্ত দুটি ক্লাবের মধ্যে ব্রাদার্স এবার মৌসুমের শুরু থেকেই অনিয়ম করে আসছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা খেলোয়াড়ই নিবন্ধন করেনি। আর্থিক সংকটের কারণে তারা অনুশীলনও চালাতে পারছিল না। ওদিকে আরামবাগ ক্যাসিনো-কাণ্ডে জেরবার হয়েও হঠাৎই আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে ভারত থেকে কোচ আনে, ক্যাম্প করে নীলফামারীতে। কিন্তু লিগ শুরু হতেই দেখা যায় দলটির ছন্নছাড়া চেহারা। লিগে ৯ ম্যাচে এখনো তারা জয়ের দেখা পায়নি, আছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, দুই ম্যাচ পরই সেই কোচ সুব্রত ভট্টাচার্যকে তারা ছাঁটাই করে দেয়।
Discussion about this post