চলতি মৌসুমে আর্থিক সংকটে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। দল গড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়লে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেন দলটির জাপানি ফুটবলার ইউসুকে কাতো। এরপর লিগ শুরু হলে মুক্তিযোদ্ধার অধিনায়ক তহবিল সংগ্রহ করেছেন দলের স্বার্থে।
বাংলাদেশের জন্য একটা আলাদা টান আছে কাতোর। এবার বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসার আরেক নিদর্শন দেখালেন এই মিডফিল্ডার। আজ সকালে সতীর্থ খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে গিয়েছিলেন শহীদ মিনারে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভাষাশহীদদের।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটা ভিডিও পোস্ট করেছেন বাংলা ভাষায়। পরনে পাঞ্জাবি, বুকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার কালো ব্যাজ।
ভিডিওতে কাতো বলেছেন, ‘আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। আমার নাম কাতো। আমি একজন ফুটবলার। আমার ভাষা বাংলা ভাষা। আমার দেশ বাংলাদেশ। আমার দল মুক্তিযোদ্ধা। আমি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসি। ধন্যবাদ।’ থেমে থেমেই বলেছেন, তবে পুরোটা বলেছেন বাংলাতেই!
ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে উচ্ছ্বসিত কাতো, ‘মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রে খেলার সুবাদে আমি অনেক আগেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম সম্পর্কে জেনেছি। ভাষার জন্য এ দেশের মানুষের আত্মত্যাগও আমার হৃদয় ছুঁয়েছে। আমার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধার ফুটবলাররা শহীদ মিনারে ফুল দিতে গেছেন, এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে।’
বাংলাদেশে দুই মৌসুম খেলার সুবাদে অল্পস্বল্প বাংলা ভাষাও শিখেছেন,‘ “কেমন আছ”? “ভালো আছি, ধন্যবাদ” এগুলো বলতে পারি।’
জানালেন জাপানে সেভাবে ভাষা দিবস পালনের রেওয়াজ নেই, ‘আসলে এটা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হলেও সেভাবে আমাদের দেশে সেটা পালন করা হয় না। অবশ্য শহীদ মিনারের বিষয়টা জাপানের অনেকে জানেন। কোনো দেশের মানুষ ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছেন, এটা ভাবলেই শ্রদ্ধা জেগে ওঠে তাঁদের প্রতি। আমি এই শহীদদের প্রতি গভীর ভালোবাসা জানাই।’
মাঠের বাইরেও সব সময় সতীর্থ বাংলাদেশি ফুটবলারদের জন্য বাড়তি কিছু করার তাগিদ থাকে কাতোর। বড় ভাইয়ের মতো সতীর্থ ফুটবলারদের খোঁজখবর নেন। সবার রুমে রুমে যান।
কাতোর এত চেষ্টার পরও মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্র অবশ্য লিগে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। ৮ ম্যাচে মাত্র ২ জয়, এক ড্র, ৫টি হার। ৭ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ দলের লিগে আছে দশম স্থানে।
Discussion about this post