পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানি হুমকি দিয়েছিলেন ভারতের উদ্দেশ্যে। হুমকিটা এই, ভারতে অনুষ্ঠেয় ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য পাকিস্তানের খেলোয়াড়-কোচ-কর্মকর্তা তো বটেই, দর্শক আর সাংবাদিকদেরও ভিসার নিশ্চয়তা না দিলে বিশ্বকাপই ভারতের মাটি থেকে সরিয়ে নিতে আইসিসির কাছে আবেদন করবে পাকিস্তান। বড় শক্ত হুমকি বটে!
কিন্তু এই হুমকিতে উল্টো বিরক্ত হচ্ছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড কর্মকর্তা বলেছেন, পিসিবি চেয়ারম্যানের এমন হুমকি তাঁর অপরিপক্বতার প্রমাণ দেয়।
বিসিসিআই সভাপতি ও কিংবদন্তি ভারত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে এহসান মানির দারুণ সম্পর্কের কথা মনে করিয়েও দিয়েছেন বিসিসিআইয়ের ওই কর্মকর্তা।
পাকিস্তান আর ভারতের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বৈরিতার প্রভাব যে ক্রিকেট মাঠে পড়েছে, তা তো আর নতুন করে বলার কিছু নেই।
২০০৭ সালের পর থেকে দুই দেশের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ হয় না, যেখানে টেস্ট–ওয়ানডে দুটিই খেলবে দুই দল। শুধু এশিয়া কাপ আর আইসিসির টুর্নামেন্টেই কালেভদ্রে সাক্ষাৎ হয় দুই দলের। আইপিএলে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদেরও খেলা হয় না ভিসা জটিলতার কারণেই।
দুই দেশের এই বৈরিতার কথা মাথায় রেখেই মানি বলেছিলেন, বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে ভিসার নিশ্চয়তা চায় পিসিবি। গত মাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মানি বলেছিলেন, মার্চের মধ্যে ভারতের কাছ থেকে ভিসার নিশ্চয়তা চান তাঁরা।
না পেলে আইসিসিকে ভেন্যু বদলানোর জন্য চাপ দেবেন। সে ক্ষেত্রে ভারত থেকে ভেন্যু বদলে টুর্নামেন্টটা সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিতে চাইবে পাকিস্তান।
কিন্তু বিসিসিআইয়ের তা ভালো লাগেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে যা লিখেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম, তাতে এটা স্পষ্টই বোঝা যায়।
সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে মানির সম্পর্কের কথা জানিয়ে ওই কর্মকর্তার বিস্ময়, ‘এহসান মানির মন্তব্যগুলো শুনে বিস্মিত হয়েছি। বিশেষ করে আইসিসিতে সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে তাঁর যেমন দারুণ দাপ্তরিক সম্পর্ক আছে, সেটির পর এমন মন্তব্য বিস্ময়করই। তিনি একজন ভদ্রলোক, সত্যি বলতে মহামারির সময়ে শশাঙ্কের (শশাঙ্ক মনোহর, আইসিসির সাবেক চেয়ারম্যান) পাশাপাশি তিনিই সৌরভকে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছেন। সেই মানির কাছ থেকে এমন মন্তব্য শোনার পর এটিকে তাঁর অপরিপক্বতাই ধরে নিতে হয়।’
এহসান মানির এমন মন্তব্যের পেছনে অন্য উদ্দেশ্যের শঙ্কাও করছেন বিসিসিআইয়ের ওই কর্মকর্তা, ‘মনে হচ্ছে, তিনি হয় তাঁর দলের এই টুর্নামেন্টে খেলা নিশ্চিত করতে একটা পথ খুঁজছেন, নতুবা পাকিস্তানে তাঁর পক্ষে সমর্থনের জন্য সংবাদমাধ্যমের মনোযোগ কাড়তে এমনটা করছেন। এই বিষয়কে যদি তাঁরা রাজনৈতিক ইস্যু বানাতে চায়, সেটা তাঁদের ইচ্ছা। তাঁরা ঠিকই জানেন যে একটা দেশের ক্রিকেট বোর্ডের আইনি ক্ষমতা নেই, এমন কিছুর নিশ্চয়তা দেওয়ার, যেটা সেই বোর্ডের আয়ত্তে নেই, কিংবা সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ওপর নির্ভরশীল।’
Discussion about this post