বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল ‘তারকা’ ভেড়াতে তৎপর। যেন তারকামুখই বদলে দেবে ভোটের দৃশ্যপট। সিনেমা কিংবা খেলা, রাজনীতির ময়দানে এখন তাঁদের নিয়ে নানা জল্পনা। আইপিএল নিলাম কিংবা ইউরোপীয় ফুটবলের দলবদলের মতোই আগ্রহ এ নিয়ে সাধারণের। এই বুঝি অমুক বিজেপিতে যোগ দিলেন, তমুককে দলে ভেড়াল তৃণমূল কংগ্রেস। ডান কিংবা মধ্যপন্থা নয়, কেউ একজন বেছে নিলেন বামপন্থাকে।
কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে বিজেপি, সেটা প্রায় অনেক দিন ধরেই। ভারতের অনেক রাজ্যেই বিজেপির গেরুয়া ঝান্ডা উড়লেও পশ্চিমবঙ্গে সেটি এখনো ওড়েনি। ব্যাপারটি যেন পিছু তাড়া করছে দলটিকে। সামনের বিধানসভা নির্বাচনেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির সবুজ দিগন্ত বদলে সূর্যরঙা করে দিতে চায় কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল। এ ব্যাপারে তাদেরও আশ্রয় ওই তারকামুখেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে তুরুপের তাস বানাতে চান তাঁরা এমন কাউকে, যাঁকে দেখে নড়েচড়ে বসবেন পশ্চিমবঙ্গের ভোটাররা।
সৌরভ গাঙ্গুলী এমনই এক তারকামুখ। ২০১৯ সালের অক্টোবরে তিনি যখন বিজেপির পছন্দের মানুষ হয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির পদে বসলেন, জল্পনাটা তখন থেকেই। তবে কি ভারতের সাবেক কিংবদন্তি অধিনায়কই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে বিজেপির তুরুপের তাস? সময় গড়িয়েছে, সৌরভ চুপ থেকেছেন এ নিয়ে। রাজনীতি নিয়ে একটা কথাও বলেননি। তবে এই তো কিছুদিন আগেই ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছে, তিনি যে রাজনীতি করতে ইচ্ছুক নন, সেটি এরই মধ্যে বিজেপিকে জানিয়ে দিয়েছেন।
তবে বিজেপি নেতৃত্ব আশায় বুক বেঁধে আছে। যদি সৌরভ শেষ মুহূর্তে মত পাল্টান। আজ রোববার কলকাতায় আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সেখানে এক বিশাল জনসভায় বক্তৃতা করবেন। মোদি মানেই চমক। তাঁর সঙ্গে জনসভার মঞ্চে কোন তারকা উঠবেন, এ নিয়ে এখন তীব্র জল্পনাকল্পনা। বিজেপি–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘চমক থাকছে।’ ভারতীয় গণমাধ্যম এরই মধ্যে জানাচ্ছে, সেই চমক নাকি ‘মিঠুন চক্রবর্তী’। ভারতীয় সিনেমার অন্যতম সেরা এই তারকা নাকি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদির হাত ধরে। মিঠুনের সঙ্গে সঙ্গে সৌরভও শেষ মুহূর্তে মঞ্চে উঠে যাবেন, কথাবার্তা এমনই।
টেলিভিশনের সংবাদকর্মীরা রাজনীতি নিয়েই প্রশ্ন করেছিলেন সৌরভকে। তিনি কিছুটা বিরক্ত হয়েই বলেছেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন।’ এর মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজনীতির নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী নন তিনি। তবে শেষ অবধি যা বলেছেন, তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার। রাজনীতিতে এখনই আসছেন না তিনি, ‘দেখুন, সবাই সব কাজের উপযোগী নয়।’
সৌরভ তো বলেই খালাস। কিন্তু এরপরও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা অনেক কিছুই ভেবে চলেছেন। সৌরভ জানুন আর না-ই জানুন, রাজনীতিকেরা একটা বিষয় সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করেন—রাজনীতিতে যে শেষ কথা বলে কিছুই নেই।
Discussion about this post