খেলাধুলা ডেস্ক
ঘরের মাঠে টানা ছয় হার! এই পরিসংখ্যান লিভারপুলের। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দুর্দশার এক মৌসুম কাটানো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা আছে পয়েন্ট তালিকার আটে। ক্লপের দলের খেলা দেখে কে বলবে এই দলটাই গত মৌসুমে কী দুর্দান্ত ফুটবল খেলে ৩০ বছর পর লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে।
দুর্দশার এক ঘরোয়া মৌসুম কাটানো সেই লিভারপুলের একমাত্র আশা এখন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে যে এখনো টিকে আছে ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। গতকাল রাতে বুদাপেস্টে জার্মানির লাইপজিগকে বিদায় করে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে লিভারপুল। প্রথম লেগের মতো দ্বিতীয় লেগেও ২-০ গোলে জয় পেয়েছে ২০১৯ সালের চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয়ার্ধে দলের হয়ে গোল করেছেন দুই আফ্রিকান তারকা মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিও মানে। মানের গোলটি চ্যাম্পিয়নস লিগে ক্লপের অধীনে লিভারপুলের ১০০তম গোল। ৪৪ ম্যাচেই মাইলফলকটি ছুঁয়েছে রেডরা।
লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ জানালেন প্রিমিয়ার লিগের ভূত যে চ্যাম্পিয়নস লিগে চেপে ধরেনি তাঁদের সেটিই বড় পাওয়া, ‘আমাদের দরকার ছিল প্রিমিয়ার লিগ ভুলে এখানে এসে ভালো করার চেষ্টা করা। এটি খুব ভালো ব্যাপার যে ছেলেরা আজকের রাতটা উপভোগ করেছে। আমাদের খুব কঠিন কাজ করতে হয়েছে কারণ চ্যালেঞ্জটা খুব বড় ছিল।’
ক্লপকে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি দিয়েছে লাইপজিগকে লাইপজিগের মতো খেলতে না দেওয়াটা, ‘আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। প্রথমার্ধে বড় সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারিনি। তবে ছেলেরা সবচেয়ে বড় যে কাজটা করেছে তা হলো কাউকে বোঝার সুযোগই দেয়নি লাইপজিগ কতটা ভালো খেলতে পারত। ওরা (লাইপজিগ) তো আসলে দৈত্যকায় দল।’
লিভারপুল মনোযোগ যে এখন পুরোপুরিই চ্যাম্পিয়নস লিগে সেটি জানিয়ে দিলেন ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ, ‘ আমাদের জন্য খুব বড় ফল এটি। প্রিমিয়ার লিগে আমরা কিছু ম্যাচে হেরেছি। দলটাও খুব ভালো অবস্থায় নেই। তবে আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগে লড়াই করতে চাই।’
চোটের কারণে ভাঙাচোরা দল নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ভালো করাটা খুব কঠিন বলেই মেনে নিয়েছেন সালাহ, ‘সবাই তো দেখতেই পাচ্ছে প্রিমিয়ার লিগে আমাদের কত কঠিন সময় যাচ্ছে। আগের দুই মৌসুমে আমরা কী দুর্দান্তই না খেলেছি, আমরা জয়ের ধারায় ছিলাম, রীতিমতো উড়ছিলাম। এ বছর দুর্ভাগ্যজনকভাবে চোটে পেয়ে বসেছে আমাদের। আমরা চেষ্টা করছি এ থেকে বেরোনোর, কিন্তু কাজটা খুব কঠিন।’
ক্লপও জানেন ভাঙাচোরা দল নিয়ে এগোনো কতটা কঠিন। তবে এই দল নিয়েই চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা জার্মান কোচের, ‘আমি বোকা নই, আমরা জানি চ্যাম্পিয়নস লিগে জেতার মতো মৌসুম এটা নয়। তবে এর মানে এই নয় যে আমরা সামনে এগোতে চাই না। আমরা যতটা সম্ভব সামনে যেতে চাই, দেখতে চাই কী করা সম্ভব।’
লিভারপুল কাল রাতে এগিয়ে যেতে পারত ম্যাচের ১৮ মিনিটেই। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোতার হেড শুধু সোজা চলে যায় লাইপজিগের হাঙ্গেরিয়ান গোলরক্ষক পিটার গুলাচির দিকে। প্রথমার্ধেই আরেকবার লাইপজিগকে বাঁচিয়েছেন গুলাচি। সালাহর বাঁ পায়ের শট আটকে দেন তিনি।
৭০ মিনিটে সালাহ ও ৭৪ মিনিটে মানের গোলেই নিশ্চিত হয়ে ২০০৮-০৯ মৌসুমের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বের দুই লেগেই লিভারপুলের জয়। ২০০৮-০৯ মৌসুমে শেষ ষোলোয় রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে দুই লেগেই জিতেছিলে লিভারপুল।
Discussion about this post