নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনের কথা চিন্তা করলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে চির সবুজ উইকেট, সেটা এতটাই সবুজ যে দূর থেকে উইকেট আর আউট ফিল্ডের পার্থক্য বের করা কঠিন। যেখানে স্পিনারদের সামনে অপেক্ষা করে কঠিন চ্যালেঞ্জ, সেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে মিরাজ-নাসুমদের।
সদ্য শেষ হওয়া টি-টুয়েন্টি সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছেন, গড়ে দিয়েছেন ম্যাচের পার্থক্য। বাংলাদেশ দল কন্ডিশনের কথা বিবেচনা করে পেস নির্ভর বোলিং আক্রমণ নিয়ে নিউজিল্যান্ডে গেলেও স্পিনাররাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, বিশ্বাস টাইগারদের স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরির।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে নিউজিল্যান্ডে রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেই নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ডেনিয়েল ভেট্টোরিই বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং উপদেষ্টা। করোনা মহামারির কারণে বছরখানেকের বিচ্ছিন্নতার পর আবার বাংলাদেশ দলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার।
কুইন্সটাউনে আগেই গিয়ে তামিমদের অপেক্ষায় ছিলেন ভেট্টোরি। বৃহস্পতিবার পাঁচ দিনের অনুশীলন শিবিরের প্রথম দিন থেকেই নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন ভেট্টোরি। নিয়মিত ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে এটি তামিমের প্রথম বিদেশ সফর হলেও তাঁর নেতৃত্বে থাকাকে বাংলাদেশের ‘সৌভাগ্য’ বলেও ধরছেন এই কিউই কিংবদন্তি।
কেন? দিয়েছেন সে ব্যাখ্যাও। বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমার মতে, এই সিরিজে তামিমকে অধিনায়ক হিসেবে নিয়ে আসতে পারাটা বাংলাদেশের জন্য সৌভাগ্যই। সে খুবই খোলা মনের মানুষ। এর আগেও নিউজিল্যান্ড সফরের চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয়েছে সে। ও ভালো করেই জানে, এখানে কোন ব্যাপারগুলো কাজ করেনি। এবার কোন ব্যাপারগুলো কাজে দিতে পারে, তা নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে ওকে খুবই ইতিবাচক মনে হচ্ছে আমার। আমাদের শুরু করার জন্য এটি তাই খুব ভালো একটি দিকই।’
অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া বাংলাদেশ তামিমের নেতৃত্বে এবার নতুন কোনো ফর্মুলা প্রয়োগ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন এই স্পিন বোলিং উপদেষ্টা, ‘আমার মনে হয়, বাংলাদেশ এই সিরিজে (নতুন) কিছু জিনিস চেষ্টা করে দেখবে। যদিও নিউজিল্যান্ড দুর্দান্ত একটি দল এবং তারা খুব ভালো খেলছেও। তবে আশা করছি, আগের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা (বাংলাদেশ) শিক্ষা নিতে পেরেছি।’
দীর্ঘদিন পর মেহেদী হাসান মিরাজদের নিয়ে আবার নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ পাওয়া ভেট্টোরি আসন্ন সিরিজে স্পিনারদের সাফল্যের আশাও দেখাচ্ছেন। তাঁর যুক্তি হয়ে উঠেছে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার সদ্যঃসমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজ। পাঁচ ম্যাচের যে সিরিজে সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন কিউই লেগস্পিনার ইশ সোধি, পেয়েছিলেন সিরিজসেরার পুরস্কারও। সোধি একা নন, দুই দলেরই একাধিক স্পিনারও পারফরম্যান্সে ঝলমল করেছেন ওই সিরিজে। তাই নিউজিল্যান্ডকে পেসারদের স্বর্গ বলে ধরা হলেও ভেট্টোরি স্পিন দিয়েও বাজিমাত করার পথ দেখিয়ে রাখছেন, ‘আমার মতে, স্পিন এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে মিচ (মিচেল) স্যান্টনার ও ইশ সোধির সাফল্যের পরিসংখ্যান দেখুন। এমনকি (অস্ট্রেলিয়ার) অ্যাস্টন অ্যাগার ও অ্যাডাম জাম্পাও এখানে ভালো করেছে। সাদা বলের সিরিজে স্পিনাররা যে নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে, সেটি সবারই জানা।’ সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে মিরাজকে নিয়েও বেশ আশাবাদী শোনাচ্ছে ভেট্টোরির কণ্ঠ, ‘মিরাজের যে অভিজ্ঞতা এবং সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে যে রকম সাফল্য পেয়েছে, তাতে আমার মনে হয় ওর পক্ষে দলকে অনেক কিছুই দেওয়া সম্ভব। ওকে সঙ্গ দিতে মেহেদী ও নাসুমরা আছে। ওরাও দলে জায়গা করে নিয়ে পারফরম্যান্স দিয়ে অবদান রাখতে সক্ষম।’
Discussion about this post