খেলাধুলা ডেস্ক
মেন্দির গোলে আতালান্তার মাঠ থেকে ১-০ গোলে জিতে এসেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। নিজেদের মাঠে কোনোরকমে ড্র করলেই পরের রাউন্ডে ওঠার টিকিট পেয়ে যেত তারা। ওদিকে পরের রাউন্ডে ওঠার জন্য মাদ্রিদের মাঠ থেকে অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে জিতে আসতে হতো। শেষমেশ জয় হয়েছে রিয়ালেরই। তবে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার সফলতম দল নিজেদের মাঠে ড্র করে পরের রাউন্ডে যাওয়ার পথ বেছে নেয়নি। বরং আতালান্তাকে ৩-১ গোলে হারিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে তারা। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ক্লাব ছাড়ার পর টানা দুই বছর চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়া রিয়াল এবার উঠতে পেরেছে পরের রাউন্ডে।
৪-৩-৩ ছকে খেলা শুরু করেছিল রিয়াল। তবে আক্রমণে ছকটা নিয়মিত ৩-৫-২ হয়ে যাচ্ছিল। গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়ার সামনে চার ডিফেন্ডার নাচো ফের্নান্দেস, সের্হিও রামোস, রাফায়েল ভারান আর গত লেগের গোলদাতা ফারলঁদ মেন্দি। মিডফিল্ডার হিসেবে লুকা মদরিচ, টনি ক্রুস ফেদেরিকো ভালভার্দের সামনে আক্রমণভাগের তিন খেলোয়াড় ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, করিম বেনজেমা ও লুকাস ভাসকেজ। ৪-৩-৩ ছকে নাচো খেলছিলেন রাইটব্যাক হিসেবে, লেফটব্যাক হিসেবে মেন্দি।
পরের রাউন্ডে ওঠার জন্য অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে জিততে হবে, এ চিন্তা থেকেই কি না, প্রথম থেকে আতালান্তাও বেশ আক্রমণ করে খেলা শুরু করে। রিয়াল যে প্রতিযোগিতার সফলতম দল, তাদের সঙ্গে খেলতে হবে রয়েসয়ে, এমন কিছু দেখা যায়নি আতালান্তার খেলায়। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার লুইস মুরিয়েলের ক্রসে ঠিকমতো পা ঠেকিয়ে গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন জার্মান লেফট উইংব্যাক রবিন গোসেনস। ২৭ মিনিটে করিম বেনজেমার পাস থেকে গোল করতে গিয়ে আতালান্তার আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর কাছে বাধা পান ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
রিয়াল এগিয়ে যায় আতালান্তার এক ভুলে। নিয়মিত গোলকিপার পিয়েরলুইজি গোলিনি এই ম্যাচ খেলতে পারেননি, তাঁর জায়গায় নামানো হয়েছিল আরেক ইতালিয়ান গোলরক্ষক মার্কো স্পোর্তিয়েল্লোকে। এই স্পোর্তিয়েল্লো নিচ থেকে আক্রমণ রচনা করার জন্য লং পাস দিতে যান বাঁ দিকে থাকা সেন্টারব্যাক বেরাত জিমসিতিকে। সেটা করতে গিয়েই গুবলেট পাকিয়ে ফেলেন, বল চলে যায় মিডফিল্ডার মদরিচের কাছে। বিপজ্জনকভাবে আক্রমণভাগে ঢুকে গিয়ে করিম বেনজেমাকে পাস দেন তিনি, সেখান থেকে ম্যাচের ৩৪ মিনিটে দলকে এগিয়ে দিতে একটুও সমস্যা হয়নি বেনজেমার।
৪২ মিনিটে ইউক্রেনের মিডফিল্ডার রুসলান মালিনভস্কি বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ে একটা শট নেন। গোল হয়নি। ৫২ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে আতালান্তার গোটা রক্ষণভাগকে নাচিয়ে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করলেও শেষমেশ গোল করতে পারেননি ভিনিসিয়ুস। ৫৭ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান সেন্টারব্যাক রাফায়েল তোলয় ভিনিসিয়ুসকে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় রিয়াল। সেখান থেকে গোল করে দলের অধিনায়ক রামোস।
৬৮ মিনিটে গোল করার আরও দুটি সুযোগ পায় রিয়াল। বেনজেমার বুলেট গতির হেড কোনোরকমে আটকে দেন স্পোর্তিয়েল্লো, ফিরতি বলে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রদ্রিগো গোজ শট নিলে পোস্টে লাগে। ৮৩ মিনিটে ব্যবধান কমায় আতালান্তা। দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে গোল করে পরের রাউন্ডে ওঠার মরতে থাকা আশাটা একটুর জন্য জাগিয়ে তোলে আতালান্তা। পরের মিনিটেই গোল করে দলকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান রিয়ালের স্প্যানিশ উইঙ্গার আসেনসিও।
আর এর সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায়, রোনালদো যাওয়ার পর টানা দুবছর দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়া রিয়াল মাদ্রিদ এবার উঠছে শেষ আটে।
Discussion about this post