খেলাধুলা ডেস্ক
শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে জামালরা খানিকটা মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকলেন। অন্যদিকে দশরথ স্টেডিয়ামে উল্লাসে ফেটে পড়লেন নেপালের ফুটবলাররা, একে অপরকে ঝাঁপটে ধরে ভাগাভাগি করলেন আনন্দ। বাল গোপাল মহারজন যেটা পারেননি ১৯৯৯ সালে কোচ হয়ে সেটা করে দেখালেন ২২ বছর পর।
নিউজিল্যান্ডে ক্রিকেট দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর সবার নজর ছিল নেপালে জাতীয় ফুটবল দলের দিকে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ফুটবলাররা দেশকে ট্রফি উপহার দিতে পারবেন- এমন প্রত্যাশা ছিল সবার।
ফুটবলারদের মুখ থেকেও বারবার শোনা গেছে স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তারা দেশকে একটি ট্রফি দিতে চান। আবার শিরোপা জিততে পারলে বিপুল পরিমানে অর্থ পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। বিদেশ থেকে ট্রফি নিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের যে প্রত্যাশা ছিল তাদের তা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে নেপাল।
সোমবার কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিযে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নেপাল।
বাংলাদেশের জালে দুইবার বল পাঠিয়ে নিজেদের আয়োজিত টুর্নামেন্টের ট্রফিটি রেখে দিলো। নেপাল দুটি গোল করেছে প্রথমার্ধে। এক কথায় প্রথম ৪৫ মিনিটেই ফাইনালটি নিজেদের করে নেয় হিমালয়ের দেশের ফুটবলাররা।
১৮ ও ৪২ মিনিটে গোলদুটি হজম করেছে জেমি ডে’র শিষ্যরা। ১৮ মিনিটে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো দারুণ এক সেভ করেছিলেন কর্নারের বিনিমিয়ে। ওই কর্নার থেকেই গোল আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা। ডিফেন্ডারের ফিরিয়ে দেয়া বল বাংলাদেশের একাধিক খেলোয়াড়ের পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে পাঠান সানজগ রাই।
দ্বিতীয় গোলটি করেছেন বিশাল রাই ৪২ মিনিটে। ৮৩ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার কর্নার থেকে সুফিল হেডে গোল করে ব্যবধান ১-২ করেন। শেষ পর্যন্ত ১-২ গোলের হারেই ২২ বছর পর নেপালের কাঠমান্ডুতে শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় বাংলাদেশের। ১৯৯৯ সালে এই স্টেডিয়ামেই নেপালকে ফাইনালে হারিয়ে বাংলাদেশ এসএ গেমসে প্রথম স্বর্ণ জিতেছিল।
ফাইনাল না দেখেই ঢাকায় ফিরছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ। কিন্তু ফ্লাইট জটিলতায় তারা নেপাল থেকে ঢাকা রওয়ানা দিতে পারেননি। বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করছিলেন ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে।
হোটেল ত্যাগের আগে বাফুফে সভাপতি চ্যাম্পিয়ন হলে ২৫ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। দেশবাসীর চাওয়া কিংবা বাফুফে সভাপতির বোনাস ঘোষণা- কিছুতেই উজ্জীবিত করতে পারেনি জামাল ভূঁইয়াদের।
বাংলাদেশ একাদশ
আনিসুর রহমান জিকো, সাদ উদ্দিন, রিয়াদুল হাসান, মেহেদী হাসান মিঠু, রিমন হোসেন, জামাল ভূঁইয়া, মানিক মোল্লা, রাকিব হোসেন, মেহেদী হাসান রয়েল, মতিন মিয়া, সুমন রেজা।
Discussion about this post