খেলাধূলা ডেস্ক
নেমেই চড়াও হয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলারদের ওপর। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের অভিজ্ঞতা তাতে দুশ্চিন্তার আরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদিও তাকে বেশি উড়তে দেননি তাইজুল ইসলাম। স্টাম্পের বেল উড়িয়ে ম্যাথুজকে থামিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার।
মাঠে নামার পর থেকে ম্যাথুজ ছিলেন সাবলীল। মনে হচ্ছিল, অনেকটা সময় কাটিয়ে দিয়েছেন ক্রিজে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বাউন্ডারির পর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু ৩২ বলে ২৫ রানে তাকে থামতে হয়েছে তাইজুলের চমৎকার বোলিংয়ের সামনে। বাঁহাতি স্পিনারের বাঁকা খাওয়া বল আঘাত করে অফ স্টাম্পে গিয়ে। এরই সঙ্গে ক্যান্ডি টেস্টে উইকেটের খাতা খোলেন তাইজুল।
২০১৭ সালের মার্চ, প্রতিপক্ষ ছিল এই শ্রীলঙ্কাই। ভেন্যু অবশ্য ভিন্ন, খেলেছিলেন গলে। ওই টেস্টেই তাসকিন আহমেদ পেয়েছিলেন সবশেষ উইকেট। এরপর কেটে গেছে ৪ বছর, যদিও এ সময়ের মধ্যে মাত্র একটি টেস্টই খেলেছেন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সময়ের পরিক্রমায় আবারও লাল বলে হাসলেন তাসকিন। লম্বা বিরতি শেষে মাতলেন উইকেট উদযাপনে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডি টেস্টে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন তাসকিন। এই পেসারের বলে ফিরেছেন ওশাডা ফার্নান্ডো। দিমুথ করুণারত্নের সঙ্গে যখন এই ব্যাটসম্যান দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, ঠিক তখনই সফরকারীদের কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু এনে দিলেন তাসকিন। ডানহাতি পেসারের লেগ স্টাম্পে পড়া বল ফার্নান্ডোর ব্যাট ছুঁয়ে গেলে ঝাঁপিয়ে গ্লাভসবন্দি করেন লিটন দাস। ফেরার আগে ৪৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ওশাডা করেন ২০ রান।
লম্বা সময় পর টেস্টে সুযোগ হয়েছে তাসকিনের। সেই সময়টাও সাড়ে তিন বছরের বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ খেলা টেস্টের দুই ইনিংসে ৩২ ওভার বল করলেও কোনও উইকেট ছিল না তার। মাঝে ফর্মহীনতা ও চোটের কারণে খেলা হয়নি। এখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফিরেই দুর্দান্ত বোলিংয়ে উইকেট উদযাপন করলেন এই পেসার।
অবশেষে এলো উইকেট মিরাজের হাত ধরে
ওভারের পর ওভার যাচ্ছে, কিন্তু কোনও সাফল্য আসছে না বাংলাদেশের। অবশেষে মেহেদী হাসান মিরাজের হাত ধরে এলো প্রথম উইকেট। এই স্পিনারের বলে ফিরে গেছেন লাহিরু থিরিমানে। তাতে ভেঙেছে শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটি।
থিরিমানের আউটের পরপরই তৃতীয় দিনের চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। সে পর্যন্ত লঙ্কানদের স্কোর ছিল ৩৯ ওভারে ১ উইকেটে ১১৪ রান। অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে অপরাজিত ছিলেন ৪৩ রানে। থিরিমানে আউট হয়েছেন ৫৮ রানে। মিরাজের বলে এলবিডাব্লিউয়ের শিকার তিনি। রিভিউ নিয়েছিলেন যদিও, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
থিরিমানে-করুণারত্নের জুটিতে দারুণ শুরু পায় শ্রীলঙ্কা। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের উইকেট যে ব্যাটিং স্বর্গ, সেটা হয়তো বলার প্রয়োজন পড়ছে না। বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে ঘোষণা করেছে প্রথম ইনিংস, যেখানে টপ অর্ডারের প্রায় সবাই রান পেয়েছেন। এরপর শ্রীলঙ্কাও উদ্বোধনী জুটিতে পায় শক্ত ভিত।
৩৮ ওভারে কোনও সাফল্য পাননি আবু জায়েদ-তাসকিন আহমেদরা। শ্রীলঙ্কার কোনও ব্যাটসম্যানকে ফেরাতে পারেননি তারা। বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের সময় নাজমুল হোসেন শান্ত-মুমিনুল হকদের সাফল্যের ফ্রেমে তাসকিন-মিরাজদের কঠিন সময়ের ছবি ফুটে উঠেছিল। মাঠেও তার ছাপ। ব্যাটিং-বান্ধব পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কান দুই ওপেনার দিমুথ করুণারত্নে ও লাহিরু থিরিমানে ছড়ি ঘোরাচ্ছিলেন সফরকারী বোলারদের ওপর। তবে চা বিরতির আগে মিরাজের সৌজন্যে এসেছে প্রথম উইকেট।
শুরুতে তারা ছিলেন ভীষণ সাবধানী। বিশেষ করে থিমিরানে তো রানই পাচ্ছিলেন না। কিন্তু সময়ের গড়ানোর সঙ্গে তিনি খোলস ভেঙে চড়াও হয়েছেন বোলারদের ওপর। পূরণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম হাফসেঞ্চুরি। অন্যদিকে অধিনায়ক করুণারত্নে সেঞ্চুরির পরও পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে এগিয়ে চলেছেন সামনের দিকে। তাকে যোগ্য সহযোগিতা দিয়ে চলেছেন ধনঞ্জয়!
Discussion about this post